নাসিম বুলবুলের কবিতা



ট্রামের দিনগুলো

১.

জন্মান্তর ও আধোনীল দ্রোহকালের ভিতরে
সবসময় চেনা জাগরূকে একটা পরিতাপ থাকে
ফেলে আসা প্রগাঢ় শহর ও মুখেদের ভিড়ে,
তাদেরকে ইচ্ছে করেই রোদ চশমা পরে থাকতে হয়

দু'পাশে লোক জড়ো হয়।তারা চুপ করে দাঁড়িয়ে ভাবে...

২.

দৃশ্যগুলো কোষের মতো শিথিল হয়ে আসলে
একটা নিদারুণ বাষ্পীয় মায়াস্তরের জন্ম হয়,
আমরা তাকিয়ে থাকি আধভাঙা আদিযুগের মতো
নতুন নতুন কমিউনিকেশন সেতুর পাঁকে
আমাদের ট্রামের দিনগুলো এখন হেরিটেজ অবয়বে

ঠায় বসে...দিনগুলোর যদি নবজন্ম হয় আর একবার!

৩.

হতাশা আসলে দৌড়ে যাই বাঁধাধরা পুকুরপাড়ে
হেলান দিয়ে বসি বুড়ো বাবলাগাছটার নীচে,
ভিখারি বীজের বেশে চোখের সামনে ভেসে ওঠে
এখানেই একদিন দু'হাত দু'হাতে মিলিয়ে
অর্ধেক স্থপতিতে কত কত কথা দেওয়া নেওয়া হতো

আজ কি তবে নিরাশাবাদী?
-না,থেকে যেতেই চাই,তবু পা টানা দেয় ঘরের দিকে...

৪.

গলির মোড়ে মোড়ে এখন আলো বিছিয়ে গেছে
অথচ এত আলোর ভিতরেও সে মুখ আর আসে না
চাঁদপানার মুখ অপেক্ষমান বুকের ভিতর
একটা আস্ত শিকড় গেড়ে গেছে,
এখন মাটির ফুঁড়ে উপড়ে ফেলার উপায় নেই

শিকড় যতই মজবুত হোক,ডাল ছাঁটলে শ্রীবৃদ্ধি আসে?

৫.

স্মৃতিমেদুরতাকে মেলাতেই হয়,ব্যস্ততা ঘিরে নেয় জীবন
'দীর্ঘজীবী হও' বলে পিরিত শ্লোক ছেড়ে গেলে
আনত দিনানি জীবনের ভার বলে থুড়ি থুড়ি

কালের স্রোত স্বভাবে চলতেই থাকে গুঁড়ি গুঁড়ি
অমন একটু আধটু সময় সময় নিষাদে ভরে ওঠে মন।


কবি নাসিম বুলবুল
সুলতানপুর, মিনাখাঁ, উত্তর ২৪ পরগনা















0 Comments