
খড়ির গন্ডী
যাজ্ঞসেনী গুপ্ত কৃষ্ণা
ইঁদুর কিংবা সরীসৃপের মতো নিজেকে আড়ালে রাখি। তার থেকে তোমাদের কথা বলা ভালো নয় কি,যা দেখি দূর থেকে? আমি তো দূরেরই মানুষ, সব সংশ্রব ছেড়ে নদীর বুকে জেগে থাকা পাথর।
ক্লান্তির ঘামজলে তোমাদের সংসারকলি ফুটে ওঠে, নেতিয়ে পড়ে,কখনও ডানা ঝাপটে উঠে দাঁড়ায়।
গড়িয়ে যাওয়া ব্যথার মতো নদীর ওপাশে ওই যে ছায়াঢাকা পথটি বিস্ময় চিহ্নের দাঁড়িটির মতো ঢালু নেমে গেছে, সে পথে হেঁটে গিয়ে ফসল ফলানো মানুষ খড়িনদীর জলে তলিয়ে যায়! সে খবর কেই বা জানে?
যেন গলুই এর কিনারায় একদলা ব্যথায় গরীব বাড়িগুলি দাঁড়ির নীচের তপতপে ফুটকি - একবর্ষা নদী এক মোচড়ে এঁকে দিয়ে ইয়ার্কি হেসে চলে গেছে।
তীরে শরবনে পরিত্যক্ত আলোছায়ায় ঘুমন্ত গল্পের গায়ে নুনজরুল।এপাশে 'খড়ির গন্ডী' রেস্তোরাঁটি ঘুমিয়ে পড়ার আগে কুরুশকাঁটায় বোনা হয়েছিল সেসব গল্প।
কোনো শব্দই হারায় না পৃথিবীতে,বাতাস নিজের বুকে সব কথা জমা রাখে। সেখানে থাকে জলেডোবা মানুষের শেষ নিঃশ্বাস,ধোঁয়াগন্ধ চা-বাগানের কিছু কথকতা...। সব কিছু স্যাঁতস্যাঁতে এই বর্ষায়। রোদ উঠলে অতীতের অতিথি,তুমি সেঁকে নিয়ো খড়ির গন্ডীর পুরোনো পশমিনা।
কবি যাজ্ঞসেনী গুপ্ত কৃষ্ণা
সেহারা বাজার, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিমবঙ্গ
0 Comments