চারটি কবিতায় ~ সুজিত রেজ


সুজিত রেজের চারটি কবিতা 

সন্তাপ

এই যে এত ভয়,শরীর-দেহ-মন,কচুকাটা 
নিত্য, ঠাকুরঘরে পঞ্চপ্রদীপ---তেল-ঘি, সলতের  পর সলতে...

উপরেও যা পাবো নীচেও পাবো তা--- তবুও পটাপট কাঠি জ্বেলে,বল্কল সন্ন্যাসীর মতো দেখি
জন্ম একটা মুখোশ,মৃত্যুতে তা পোড়ে,
               মাঝের সময়টুকু ছাগসঙ্গীত।

এই সবকিছু জেনেও লাট্টু-লেত্তি ঘুরিয়েই চলি।
বকলমে প্যাঁচ-পয়জার খিঁচে-খিঁচে মগডালে                                     উঠে বসতে চাই।

ঠিকানা আমার লেখা হয়নি আজও 
            বজ্রমেঘে পড়ছি তার রূপ।
খোসার কষ্ট অভিমান স্যাঁতলে ধ্রুবপদ রচনা করা ভুলে যাচ্ছি ক্রমশ। বুঝতে পারছি,
চলনবিলের নৈর্ঋত কোণে বসে থাকার দিন                     ফুরিয়ে এল আমার।

আয়ু

পুরনো লেখার প্রেমে পড়ে যাই বারবার
হারানো গানের খাতা,কড়িকাঠ,কাঠের দরজা
দোয়াত-কলম আর বাতাবিলেবুর বল

গাছের বাকলে লাল পিপড়ের ঘরবাড়ি
শাবক প্রহরারত মগডালে দাঁড়কাক 
ইস্কুল পালানো ছেলেটার অপার মুগ্ধতাবোধে
পাকা আলফানসোর মতো  রোদ্দুর ছড়ায়

বেঁচে থাকা দায় নয় এভাবেই বেঁচে থাকা যায়

দূরত্ব

দূরত্বই সম্পর্কের জ্বালামুখী আগুন।

মানস সরোবরের বরফভিজে পাতা।

দূরত্বই সনাতন।

আদি অনন্তের মধ্যমবিন্দুহীন।

দূরত্ব সঙ্কুচিত প্রাণের স্ফীতি।

নির্জ্ঞান মনের দেউল।

দূরত্ব বিপ্রলম্ভের গৌরগৌরব যমজ বেদনা।

দূরত্ব থাকুক চাঁদ আর এই পৃথিবীর।

শস্ত্র

অনেকদিনই তো হল মিলিজুলি কাব্যিটাব্যি
আর কতদিন --- ষাট বালাই
এত কথা এত ব্যথা এত ঢ্যামনামি
আঁকাবাঁকা শতচ্ছিন্ন কাঁথা সেলাই
বিপিএল জিএসটি চার অক্ষর দ্ব্যক্ষর
নেমেসিস বেনফিস দলাইমলাই

কেউ আমার সঙ্গে যাবে না
সজনে গাছ অ্যাকোরিয়ামের মাছ রঙিন ফাতনা
ইনক্রিমেন্ট ইনহেলার খানসামা

অনেকদিনই তো হল---এসো এবার ছুটিনি
মিছে এ শস্ত্রের ঝনঝনানি

কবি সুজিত রেজ
                        চুঁচুড়া, হুগলি, পশ্চিমবঙ্গ















0 Comments