᯾ এবং শ্রেণি বন্ধুরা ᯾

                                     
🔹গল্প:


              ✒️ ঋভু চট্টোপাধ্যায়🔸দুর্গাপুর🔸



🔰-বাবা, তুমি কি পার্টি কর ?
সুকান্তের কথাগুলো বাবার কানে যেতেই বিছানায় শুয়ে শুয়েই ঘাড় ঘুরিয়ে বাবা জিজ্ঞেস করে,‘কেন’রে আমার পার্টি করাতে কি হবে?’ সুকান্ত এই মাত্র বাইরে থেকে ঘরে ফিরল।বৈশাখের গরম, এর মধ্যেই বাইরে লু বইছে।চোখ মুখে রুমাল বাঁধা থাকলেও সারাটা শরীর ঘামে ভিজে গেছে।কোন রকমে পা’দুটো ধুয়েই বাবার কাছে গেল।ওষুধের পাওয়ার এই সময় কমে যাওয়ার জন্য বাবার শরীরও শিথিল হয়ে যায়।প্রতিদিনই এই সময়টাতে শুয়ে থাকে, মা টুকটাক যতটা পারে হাতে হাতে এগিয়ে দেয়।এর বেশি কিছু করতে পারে না। মাকেও সকাল থেকে উঠে একা একা সব কাজ করতে হয়, বাবাকে দুপুর একটার মধ্যে খাবার দিতে হয়, তারপর ওষুধ দেওয়া। ওষুধ খাওয়ার  ঘন্টা খানেক পরে ওষুধ কাজ করতে আরম্ভ করে, তাও প্রতিদিন করে না।তখন কথা জড়িয়ে যায়।সেদিনও জড়ানো গলাতেই উত্তর দেয়,‘আমি তো সেই অর্থে কোন পার্টি করিনি, তবে চাকরি করতে একটা ইউনিয়নে নাম লেখাতে হয় এই পর্যন্ত।’
–কোন ইউনিয়ন, ডান না বাম?
-মাঝামাঝি।
-হবে না, বাবা।
শেষের কথাগুলোতে সুকান্তের জমে থাকা শ্বাস জড়িয়ে গেল।কিছুক্ষণ চুপ করে বাবার দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে থেকে বলে, ‘চেনা জানা কেউ নেই?’
-কি করবি? অত ডান, বাম এই সব জিজ্ঞেস করছিস কেন?

                                             ২

কথাগুলো একটাও খারাপ বলেনি।কিন্তু শুনে সুকান্তের খুব কষ্ট হয়।সত্যিই তো এম.আই.এসের এই অল্প টাকা, এতে বাবার ওষুধ, সংসার খরচ চলবে কি করে।মা’কে কিছু বললেই এখন রেগে যায়, কিন্তু এতে যে কিছু করবার নেই, না পারে নিজে বুঝতে, না পারে অন্যকে বোঝাতে। কানের কাছে টিক টিক না করলেও মায়ের কষ্টটা বুঝতে পারে।ভাই রেগুলার কলেজ ছেড়ে ওপেনে ভর্তি হয়ে পড়া আরম্ভ করেছে, বলে, ‘যদি পার্ট টাইম কিছু কাজ  করতে পারি।’
–পার্টটাইম কাজ! সেও তো পাওয়া বেশ কঠিন।
সুকান্ত এম.এ রেজাল্ট বেরোনোর পর এক দিনও অপেক্ষা করেনি।প্রায় সব স্কুলেই বায়োডেটা জমা দিয়েছে।সেই সঙ্গে যে সব স্কুলের অফিসে দেখা করতে দিয়েছে তাদের প্রত্যেক স্কুলেই প্রিন্সিপাল  বা হেডমাস্টারের সাথে কথাও বলেছে।
সুকান্ত কয়েকটা টিউসন করে, ভাইকেও একটা কম্পিউটার সেন্টারে ভর্তি করে দিয়েছে।নিজেও সেই সেন্টারে স্পোকেন ইংলিশের ক্লাস করায়।সব ঠিক আছে কিন্তু খরচ তো দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে।তার মাঝে প্রতিমাসে বাবার ডাক্তার ওষুধ আর টেস্টেই তো তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা এক্কেবারে বাঁধা।
কারখানা বন্ধ, সুকান্তরা যদি কিছু চেয়ে বসে এই ভয়ে দুপক্ষের আত্মীয় স্বজনরাও সব যোগাযোগ রাখা বন্ধ করে দিয়েছে।এম.এ পড়বার সময় রিমা পাশে ছিল, খুব হেল্প করেছে।এর থেকে বেশি কিছু তো আর বলা যায় নি। রিমা বললে সুকান্তের কাছে সেই সময় কোন উত্তর ছিল না।শেষ যেদিন দেখা হয় বলে, ‘চল না দুজনা একসাথে কম্পিটিটিভ পরীক্ষার জন্যে খাটি।’
একসাথে খাটা! বেশ ভালো, সপ্তাহে অন্তত কিছুটা সময় রিমার সাথে থাকা যাবে, কথা বলা যাবে। তারপরেই মাথায় চাপ লাগে। এটা সম্ভব নয়। রিমার বাবা তখনও চাকরি করেন।কিন্তু সুকান্ত কিভাবে সব কিছু ছেড়ে পরীক্ষার জন্য খাটবে?
খেতে বসে একদিন মা বলে, ‘বাবু, আশীষকে একবার বল না, যদি মডেল স্কুলটাতে কিছু একটা ব্যবস্থা করা যায়, শুনেছি ওর নাকি ওখানে ভালো হাত আছে,স্কুলটাও বেশ ভালো, ভালো পেমেন্ট দেয়।একদিন ঘোষালদার বৌ বলছিল, ওর ছোট মেয়েটা ওখানে তো কাজ করে।’
আশীষদার কম্পিউটার সেন্টারেই সুকান্ত স্পোকেন শেখায়, ভাইও ঐ সেন্টারে শেখে। মডেল স্কুলের কমিটির মেম্বারদের প্রত্যেকের সাথে খুব ভালো সম্পর্ক।
আশীষদাকে বলতেই দাদা কিছু সময় চুপ থেকে বলে,‘এক কাজ কর, একটা বায়োডেটা দিয়ে এস, আমি কথা বলে রাখব, তবে ক্যাশপাতি কিছু লাগবে।’
-ক্যাশপাতি! তাও কত?
-কথা বলি,তারপর তোমাকে বলব।
বাড়িতে কথাগুলো বলতে বাবার থেকে মা বেশি আনন্দ পায়, ‘ভাইটাও একটু শান্তিতে পড়তে পারবে, রাত জেগে জেগে শরীর খারাপ হয়ে যাচ্ছে।’
বাবা কিছু না বললেও বোঝা যায় আনন্দ পেয়েছে।এর মাঝে অবশ্য সুকান্ত আরোও কয়েকটা স্কুল ঘুরে ঘুরে বায়োডেটা দিয়ে এসেছে।কয়েকটা জায়গায় ইন্টারভিউও দিয়েছে।একটা স্কুল জয়েন করতেও বলেছে।তবে পেমেন্টটা এক্কেবারে খুব কম।সেজন্যেই একটু দোনোমোনো করছে।বাবা জয়েন করবার কথা বললেও মা বারণ করে বলে, ‘না’রে আগে আশীষদা কি বলে দেখ, তারপর সিদ্ধান্ত নিবি।’ কয়েকদিন পরেই আশীষদা ডেকে পাঠিয়ে বলে, ‘শোনো, এমনিতে সব কিছুই হয়ে গেছে, তবে একটা চিঠির প্রয়োজন।’
-চিঠি! কার চিঠি?
-কার মানে কোন বড় নেতার।
-বড় নেতা? কাদের ?
–কাদের বোঝো না, যারা আছে।
 সুকান্ত বাড়িতে এসে কাউকে কিছু না বললেও কয়েকদিন ধরে যুদ্ধ আরম্ভ করে, কলেজ বা ইউনিভার্সিটিতে সেরকম ভাবে কোনদিন ইউনিয়ন অফিসে যায় নি, ইউনিয়ন মানে কয়েক বছর কলেজ ফেস্টে একটু আধটু অনুষ্ঠান, বা ইন্টার কলেজ কম্পিটিসনে যাওয়া।শহরেও কোন দিন কোন মিটিং মিছিলে যায় নি।তবে টুকটাক কবিতা লেখার সূত্রে একটা লেখক সংগঠনে মাঝে মাঝে যায়।তাও সৌম্যদার পাল্লায় পড়ে।একদিন বিকালে শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া একটা নদীর তীরে বসে বসে সৌম্যদার সংগঠনে নাম লেখানোর কথা বলে।চমকে ওঠে সুকান্ত।কবিতা লিখতে গেলেও সংগঠন!এতো মহা জ্বালা। কথাগুলো সৌম্যদাকে বলতেই লেকচার আরম্ভ করে। সমাজ, শিক্ষা, ইত্যাদি।কয়েকদিন পরেই একটা সভাতে কবিতা পড়তে আমন্ত্রণ পায়, সেখানেই সুকমলদার সাথে আলাপ হয়।নেতা মানুষ, প্রথম আলাপেই ফ্রেঞ্চ কাট দাড়ি ঢাকা গালের ভিতর দিয়ে বেশ গম্ভীর গলায় জিজ্ঞেস করে, ‘কি পড়া হয়?’
সুকান্ত ‘কেমিস্ট্রি’ বলতেই ভ্রু কুঁচকায়।‘কেমিস্ট্রি আর কবিতা, দুটোই তো দুটো মেরু।’
-কিন্তু মাথা হাত একজনেরই।
-ভালো।
তারপরেই সৌম্যদার দিকে তাকিয়ে বলে, ‘বুঝলি কবিতা লিখতে গেলে পড়াশোনা দরকার।তোর মত অগাবগাদের কবিতা হবে না।’
কথাগুলো শুনতে শুনতে সুকান্তের ভালোই লাগছিল।তারপরেই যেখানে কবিতার অনুষ্ঠান হত, সেখানে ঠিক কবিতা পাঠ করতে ডাক পেত।শহরের অনেকগুলো পত্রিকাতে নিয়মিত লেখাও প্রকাশ পেতে লাগল। ভালো লাগলেও মাঝে মাঝেই চাকরি আর বাড়ির অবস্থাটা খোঁচা লাগত।পত্রিকা পৌঁছাতে প্রায়ই এর ওর বাড়ি যেতে লাগল, যোগাযোগ হতে লাগল সংগঠনের বিভিন্ন কর্তা ব্যক্তিদের সাথে।
আশীষদার কথা শুনে সব থেকে প্রথমে সুকমলদার কথাই মনে এল।পরের দিনই চলে গেল, সুকমলদাকে এর আগে বহুবার বাবা-মায়ের কথা, বাড়ির কথা, ভাইয়ের কথা বলেছে।সেদিনও সব কথা শুনে ভালোভাবেই বলে উঠল, ‘সব বুঝলাম, কিন্তু একটাই প্রশ্ন, তোমার বাবা কি ইউনিয়ন করতেন এটা না জানলে তো কিছু হবে না।’ বাড়ি ফিরে অনেক ভাবনা চিন্তার মধ্যেও সুকমলদার সাথে কিছুতেই বাবাকে যোগ করতে পারল না।মাঝের ইউনিয়নের অনেক ভোজবাজি, এখানে কেউ কারোর জন্য বিনা কারণে একটা শব্দও লিখে দেবে না।
 সৌম্যদার কথাও মনে পড়ল।লেখক সংগঠনের পাশে মাদার সংগঠনেও ভালো যাতায়াত। প্রায় বিভিন্ন মিছিল মিটিং এ যায়। কিন্তু সৌম্যদাকে বলতেই সব শুনে  অসীমদার সাথে দেখা করতে বলল। অসীমদা আবার লেখক সংগঠনের পাশে শিক্ষক সংগঠনের নেতা। সুকান্তকে বহুবার বহুজনের বাড়িতে পত্রিকা পৌঁছে দিতে পাঠিয়েছে, কিন্তু কোন বারেই এক পয়সা বাস ভাড়া দেয়নি।
সৌম্যদার মুখে কথাগুলে শুনে বলে উঠল, ‘অসীমদাকে বলে কিছু হবে?’ পরেরদিনেই দাদাকে ফোন করতেই সন্ধেবেলা তাদের পাড়ার পার্টি অফিসে আসতে বললেন।সুকান্ত আর কিছু ভাবে নি।যে পার্টি অফিসের কোন দিন চৌকাঠ মারায় নি সেখানেই কয়েকটা সন্ধে কাটালেও অসীমদাকে পেল না।অথচ বাড়ি ফিরে  ফোন করতেই প্রতিবারেই বলে উঠলেন, ‘ আরে বোলো না, এমন একটা কাজে আটকে গেছিলাম, বেরতে পারলাম না।তুমি কষ্ট করে আরেকবার কাল এসো।’ মা  সব শুনে বলে, ‘কালকে কাল শাপে খেলেই মুশকিল। ছেড়ে দে, আর যেতে হবে না।’ সুকান্তের খারাপ লাগলেও কিছু করবার নেই।
  কয়েকটা দিন পরে এক সন্ধের দিকে আশীষদার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করে,‘দাদা, চাকরিটা কি চিঠি ছাড়া হবে না?’
আশীষদা কথাগুলো শুনে কিছুক্ষণ চুপ থাকবার পরে জিজ্ঞেস করে, ‘চিঠি পেলে না?’
সুকান্তের শ্বাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল, কি উত্তর দেবে? যে সৌম্যদারা কয়েকমাস আগে পর্যন্ত সংগঠন, সমাজ, সাহিত্য, করে ঝাঁপাচ্ছিল, বলেছিল কোন  সমস্যায় পড়লে অবশ্যই আসবে। কিন্তু বহুবার তাদের বাড়ি, পার্টি অফিস গেলেও, একটা চিঠির ব্যবস্থা করতে পারল না?
-না’গো হল না।
–ঠিক আছে,আমি দেখব তবে টাকা হয়ত একটু বেশি লাগবে।
বাড়ি ঢুকলেই মায়ের মুখটা প্রতিদিনই আরো ছোট হতে আরম্ভ হয়ে যায়।সুকান্তের রাতে ভালো করে ঘুম হয় না। মাঝরাতে চমকে ওঠে,চারদিকে অন্ধকার, তারমধ্যে হাজার হাজার কঙ্কাল সঙ্গে কত রকেমর অদ্ভুতুড়ে সব মূর্তি। একসাথে শরীরের থেকে রক্ত মেদ মাংস সব খাবলে খুবলে টেনে নিচ্ছে।মৃত্যু কি এর থেকেও কঠিন?
দিন দুই পরে সন্ধের সময় সুকান্ত টিউসন পড়িয়ে বাড়িতে ঢুকলে মা কথায় কথায় বলে, ‘বাবুরে যদি স্কুলে কিছু না হয় তবে অন্য কোন জায়গায় একটা চাকরির ব্যবস্থা কর।’
–না, মা অন্য কোন চাকরি করতে পারব না, স্কুলেই ভালো,সময় পাবো, বাবার ওষুধ, ডাক্তার সব করব কিভাবে?
-কিন্তু এভাবে আর কত দিন হবে বল?
এবার সুকান্ত কোন উত্তর দিতে পারে না।আরেকটা স্কুলে ইন্টারভিউ হয়ে গেছে,শুধু জয়েনিংটা পরে জানিয়ে দেবে বলেছে।হেডমিস খুব ভালো, পেমেন্টটা কম, তবে বলেছে টিউসন পাওয়া যাবে,ফোন নম্বরটা আছে,ফোন করতে হবে। সামনের মাসে বাবার ইউ.এস.জি আছে।নার্ভের রোগের ওষুধে লিভারের ওপরও চাপ পড়ে।সরকারী হাসপাতালে বাবা যেতে পারবে না,অপেক্ষার লাইনে দাঁড়ানোর জন্যেও শান্তির প্রয়োজন।তার আগে আশীষদাকে শেষবারের মত একবার জিজ্ঞেস করতে হবে।
নতুন স্কুলটা এমনিতে ভালো।পেমেন্ট কম হলেও স্টুডেন্ট গুলো ভালো।কয়েকদিন পড়ানোর পরেই ক্লাস টেনের একটা টিউসন ব্যাচও আরম্ভ  হয়।স্কুলের সবাই খুব খুশি।শুধু মা মাঝে মাঝেই বলে, ‘বাবু, পেমেন্টটা খুব কম।’ সুকান্ত উত্তর দেয় না।মডেল স্কুলের একজনের কাছ থেকে জানতে পেরেছে রিক্রুটমেন্টের সব প্রসেস হয়ে অ্যাপয়েনমেন্ট লেটারও টাইপ হয়ে গেছিল। শুনে কষ্ট হয় নি,দু’চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে এসেছিল।সঙ্গে সঙ্গে আশীষদার কাছে গিয়ে সব জিজ্ঞেস করতেই আশীষদা বলে, ‘আমি সব জানি, কিন্তু আমারও তো ব্যবসা আছে, আমি কারোর নাম করতে পারব না।তোমার চাকরিটা হলে আমার ভালো লাগত, তবে দেখা যাক।’
সুকান্ত এই কথাগুলো  বাড়ির কাউকে আর বলে নি।নতুন স্কুলের আসা-যাওয়ার রাস্তায় মডেল স্কুলের পাশ দিয়েই যেতে হয়। অনিচ্ছা সত্বেও চোখ চলে যায়।স্যার ম্যাডাম আরো অনেক ছাত্র ছাত্রির ভিড়।পাশ কাটিয়ে সাইকেল চালিয়ে যেতে বেশ অসুবিধা হয়, অথচ সবকিছু কত স্বাভাবিক।
স্কুলে ঢোকার কয়েকমাস পরেই সৌম্যদা ফোন করে, ‘কোথায় আছো?একবার কমিউনিটি সেন্টারে এস, একটা প্রতিবাদ সভা আছে,তুমি তো অনেকদিন কোন সভাতেই আসছ না।’
সুকান্ত নিজের থেকে কোন প্রশ্ন করে না,উত্তর দেয় শুধু ‘হ্যাঁ’ আর ‘না’।সৌম্যদা ফোন কাটতেই কন্টাক্টে গিয়ে দুটো নাম ডিলিট করে দেয়। বাইরে গুমোট গরম থাকলেও  সুকান্তের এতক্ষণে নিজেকে একটু হালকা লাগে।
              ---------------------------------------------

0 Comments