
কাশ
তখন আমি বছর ছয়েক।
পাড়ার বাগানবাড়িটায় রোজ খেলতে যেতাম।
এক্কাদোক্কা, চুকিতকিত আর কুমিরডাঙা।
চশমা চোখে বোসদাদু তখন দোতলা থেকে বসে আমাদের খেলায় রেফারিগিরি করত।
আর মাঝে মাঝে খেলার পর দিদিমা আমের মোরব্বা খাওয়াত।
সেরকমই একদিন খেলতে গিয়ে হঠাৎ আবিষ্কার করলাম কোন এক ম্যাজিক বলে পুরো বাগানটা সাদা।
সেই চিনেছিলাম কাশ।
তারপর টিভিতে পথের পাঁচালী।
দাদুকে জিজ্ঞেস করেছিলাম এটা আমাদের বাগান, তাই না?
দাদু হেসেছিল, বলেছিল না ।
বালিকা আমি হিসেব মেলাতে পারিনি।
কাশফুল গুলো তো একই রকম তো দেখতে, তাহলে?
সময়টা ছিল খুব সম্ভবত উল্টোরথের কিছু পরে।।
তারপর পরিচয় স্কুলবাড়ির সাথে।
সিলেবাসে মন দিতে হবে, তাই বন্ধ হল খেলা।।
একদিন হঠাত্ শুনি দাদু নেই,
দিদাও কোন এক সকালে তারা হয়ে গেল
পিছনে রয়ে গেল কাগজে আলতা মাখানো পায়ের ছাপ।।
বোসদাদুর ছেলে অঙ্কে খুব ভালো ছিল শুনেছি,তাই ওখানে এখন পাঁচতলা ফ্ল্যাট।
আর আমি?
এখন বিবাহসূত্রে দাক্ষিণাত্যে।
ব্যস্ত নাগরিক গন্ধের জমায়েতে।
একা একা অনেক খুঁজেছি।
পাইনি।
এখানে কাশ ফোটে না।
শুধু পাতা ঝরার শব্দ শোনা যায় ।।
0 Comments