দিশারী মুখোপাধ্যায়ের গুচ্ছ কবিতা
উত্তম মাতাল
মাতাল উত্তম কুমারকে একদিন সিঁড়ির রেলিং ধরে ঝুঁকে
কারো সঙ্গে কথা বলতে দেখেছিলাম । হলের নাম চিত্রালয় ।
ছবির নাম মনে নেই । সিনেমা ভাঙার পর
হল ছেড়ে বেরিয়ে আসার সময় লক্ষ্য করেছিলাম- হলের সব সিঁড়ি এবং রেলিং তখনো মাতাল । পঞ্চাশটা বছর খরচ করে ফেলেছি একটাকার নোটের মত । মাতালও দেখেছি দেখেছি আরও অনেক । তাদের কারও তেমন নেশা দেখিনি, যা একজন থার্ডপার্সন সিঙ্গুলার নাম্বারকেও মাতাল করতে পারে ।
উত্তমবাবু সেদিন খুব রেগে রেগে কথা বলছিলেন ।
রাগের সময়ও কোনো মানুষকে এতো সুন্দর দেখায় ! যাকে ভৎসনা করছিলেন তিনি হয়তো সেই সৌন্দর্য উপভোগ করছিলেন ।
সেই ভাগ্যবান বা ভাগ্যবতী কে ছিলেন আমার মনে নেই। আমি তো সেদিন তাকে দেখিইনি । ছবির নাম মনে নেই । হয়তো তেমন ছবি কখনো তৈরিই হয়নি ।
টাইটানিকের রোজ
১৯১২ সালের ডুবে যাওয়া টাইটানিকের
এক সুন্দরী যাত্রী
১৯৯৭ সালে রোজ নাম নিয়ে ফিরে আসে আমার কাছে
জ্যাক নামে ডাকে আমাকে
এখনো সেই রোজ আসে রোজ রোজ
আর আমি ডুবে আছি সমুদ্রের তলদেশে
জেমস ক্যামেরন সাহেব তাকে পাঠিয়ে দেন
অথচ তারই পরিকল্পনা অনুযায়ী
আমি রয়ে গেছি আটলান্টিকের তলায়
উঠে আসার আপ্রাণ চেষ্টা করছি
আমার দিকে হাত বাড়িয়ে রেখেছে সুন্দরী রোজ
একদিন না একদিন আমি উঠে আসবোই
তুলসী-ম্যাজিক
তুলসী চক্রবর্তীর কথা নিশ্চয়ই মনে আছে পাঠকের
সত্যজিৎ বাবুর পরশ পাথরটির কথা মনে করুন একবার
মনে পড়ে যাবে সেই বিস্ফারিত,উজ্জ্বল,হতবাক চোখজোড়া
পরশুরামের গল্পটিকে অনেকেই পরাবাস্তবতার গল্প বলেন
আমাদের দেখা তুলসী-ম্যাজিকটি কিন্তু ছিল
চূড়ান্ত বাস্তব এবং স্পর্শপাথর
হয়তো এখন তাঁকে কেউ চিনতে পারবেন না
অত বড় বিশাল শরীর আর নেই
বিস্ময়ের বিকল্প হয়ে ওঠা সেই চোখ
কিংবা তাঁর উপস্থিতির চারদিকে আর টগবগ করে না স্ফূর্তি
হয়তো তিনি এখন একজন নিরীহ বাঙালি কবি
সারাদিন উঠতে বসতে আহার করেন লাঞ্ছনা
কবি দিশারী মুখোপাধ্যায়
দুর্গাপুর,পশ্চিম বর্ধমান
দুর্গাপুর,পশ্চিম বর্ধমান
2 Comments
খুব ভালো লাগলো
উত্তরমুছুনখুব ভালো লাগলো
উত্তরমুছুন