
ঘরেই থাকুন
ঘরেই থাকুন' বলি যখন,
ধরে নেওয়া যেতে পারে --
এই পৃথিবীতে সবার কাছে
কিছু হোক আর না-ই হোক,
একটা ঘর নিশ্চয়ই আছে !
এমনকি তাদের কাছেও --
ঘর চালাবার জন্যে ঘর ছেড়ে
ঘর থেকে বহুদূরে আছে যারা,
যারা যাযাবর, যারা ভিখিরি,
অন্যের জন্যে কুয়ো খুঁড়ে
নিজেরই জোটে আঁজলা-ভরা জল যাদের,
যারা ফুটপাতে, নালার কিনারে,
গাছের নিচে, পাইপের ভিতর,
রিক্সার পেছন-সীটে, পুলের নিচে,
স্কাইওয়াকে, বন্ধ দোকানের বাইরে,
গুমটির আড়ালে, শুকনো নালার ভিতরে থাকে
তাদের সবার কাছে আছে
নিশ্চয়ই এমন একটা নিজের ঘর --
যেখানে ছোঁয়াচে রোগ থেকে
বেঁচে থাকতে পারে সুরক্ষিত !
আর ঘর আছে যখন
বাসনপাতিও হবে, আনাজ হবে,
উনুন জ্বালানোর রসদও ...
বারবার হাত ধোয়ার জন্য সাবান থাকলে
কারই বা আপত্তি ঘরে না-থাকার !
ঘর ছেড়ে তবু ওরা
বেরিয়ে পড়েছে রাস্তায় নগ্ন পায়ে
নিরন্ন, তৃষ্ণার্ত।
আর এত বড়ো পৃথিবীতে
জিজ্ঞেস করার মত কেউই নেই :
কারা তোমরা ? কোথায় চলেছো ?
কেনই বা ? খেয়েছো কিছু ?
আঁজলা-ভরা জলেরও আকালে আর্ত
ওরা সব কারা --
যারা ঘরে থাকতে চায় না ?
ওদের কি মৃত্যুরও ভয় নেই ?
ওদের না-থাকুক, অন্যদের তো আছে !
ওদের থেকেই না ছড়িয়ে পড়ে
ভয়ঙ্কর ব্যাধি সেই সব মানুষদের মধ্যে --
যাদের নিজস্ব ঘর আছে,
রেশন কার্ড আছে, আধার কার্ড আছে,
ভোটার আইডি আছে,
মিলে-কারখানায় চাকরি আছে,
ব্যবসা আছে, প্রভূত সম্পত্তি আছে,
ক্ষমতা, শক্তি, উপকরণ সব আছে ...
এদের ভালো রাখার জন্যে বলা হচ্ছে ওদেরও
'ঘরে থাকুন'--
পৃথিবীর আদি কাল থেকে
আজও যাদের কোনো ঘর হল না !
ধরে নেওয়া যেতে পারে --
এই পৃথিবীতে সবার কাছে
কিছু হোক আর না-ই হোক,
একটা ঘর নিশ্চয়ই আছে !
এমনকি তাদের কাছেও --
ঘর চালাবার জন্যে ঘর ছেড়ে
ঘর থেকে বহুদূরে আছে যারা,
যারা যাযাবর, যারা ভিখিরি,
অন্যের জন্যে কুয়ো খুঁড়ে
নিজেরই জোটে আঁজলা-ভরা জল যাদের,
যারা ফুটপাতে, নালার কিনারে,
গাছের নিচে, পাইপের ভিতর,
রিক্সার পেছন-সীটে, পুলের নিচে,
স্কাইওয়াকে, বন্ধ দোকানের বাইরে,
গুমটির আড়ালে, শুকনো নালার ভিতরে থাকে
তাদের সবার কাছে আছে
নিশ্চয়ই এমন একটা নিজের ঘর --
যেখানে ছোঁয়াচে রোগ থেকে
বেঁচে থাকতে পারে সুরক্ষিত !
আর ঘর আছে যখন
বাসনপাতিও হবে, আনাজ হবে,
উনুন জ্বালানোর রসদও ...
বারবার হাত ধোয়ার জন্য সাবান থাকলে
কারই বা আপত্তি ঘরে না-থাকার !
ঘর ছেড়ে তবু ওরা
বেরিয়ে পড়েছে রাস্তায় নগ্ন পায়ে
নিরন্ন, তৃষ্ণার্ত।
আর এত বড়ো পৃথিবীতে
জিজ্ঞেস করার মত কেউই নেই :
কারা তোমরা ? কোথায় চলেছো ?
কেনই বা ? খেয়েছো কিছু ?
আঁজলা-ভরা জলেরও আকালে আর্ত
ওরা সব কারা --
যারা ঘরে থাকতে চায় না ?
ওদের কি মৃত্যুরও ভয় নেই ?
ওদের না-থাকুক, অন্যদের তো আছে !
ওদের থেকেই না ছড়িয়ে পড়ে
ভয়ঙ্কর ব্যাধি সেই সব মানুষদের মধ্যে --
যাদের নিজস্ব ঘর আছে,
রেশন কার্ড আছে, আধার কার্ড আছে,
ভোটার আইডি আছে,
মিলে-কারখানায় চাকরি আছে,
ব্যবসা আছে, প্রভূত সম্পত্তি আছে,
ক্ষমতা, শক্তি, উপকরণ সব আছে ...
এদের ভালো রাখার জন্যে বলা হচ্ছে ওদেরও
'ঘরে থাকুন'--
পৃথিবীর আদি কাল থেকে
আজও যাদের কোনো ঘর হল না !
ভয়
বুদ্ধিমানেরা দেখলো
সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় ভয়।
উৎপাদনের চিন্তা নেই,
পরোয়া নেই জমানোরও।
পৃথিবীতে যেমন
অফুরন্ত পড়ে আছে
চার ভাগের তিন ভাগ জল,
কোনো জায়গার দরকার নেই,
দরকার নেই
বিশেষ কোনো সময়েরও।
বিক্রি কোথায় হবে না ?
মন্দিরে মসজিদে হাসপাতালে স্কুলে
ঘর বাজার ধর্মসংস্কার নৈতিকতা
সৌন্দর্য রাজনীতি ব্যবসা ...
এমন কোনো জায়গা নেই
যেখানে বিক্রি হচ্ছে না ভয় !
কোথাও খোলাখুলি কোথাও লুকিয়ে
কোথাও লুকিয়ে রেখে তো কোথাও দেখিয়ে।
জন্ম থেকে মৃত্যু,
এমনকি তারও পরে
হু হু করে বিক্রি হওয়া যদি কিছু থাকে
তবে, তা হল ভয় ।
পুঁজি লাগে না, লগ্নিও না
শুধু লাভ, নির্ভেজাল লাভ !
ঈশ্বরের মত ছাঁচে-ঢালা, মৃত্যুর মত অমোঘ,
অমোঘ এতটাই যে,এর বিরুদ্ধাচরণও
তার মদত ছাড়া অসম্ভব !
পবিত্র পুস্তক বলে --
সবকিছু ত্যাগ করে শরণ নাও ভয়ের।
ভয়ই বহন করবে
তোমার সমস্ত অপ্রাপ্তির প্রাপ্তি
আর প্রাপ্ত সমস্ত কিছুর রক্ষার দায় !
_____________________________
মূল হিন্দি থেকে অনুবাদ : স্বপন নাগ
সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় ভয়।
উৎপাদনের চিন্তা নেই,
পরোয়া নেই জমানোরও।
পৃথিবীতে যেমন
অফুরন্ত পড়ে আছে
চার ভাগের তিন ভাগ জল,
কোনো জায়গার দরকার নেই,
দরকার নেই
বিশেষ কোনো সময়েরও।
বিক্রি কোথায় হবে না ?
মন্দিরে মসজিদে হাসপাতালে স্কুলে
ঘর বাজার ধর্মসংস্কার নৈতিকতা
সৌন্দর্য রাজনীতি ব্যবসা ...
এমন কোনো জায়গা নেই
যেখানে বিক্রি হচ্ছে না ভয় !
কোথাও খোলাখুলি কোথাও লুকিয়ে
কোথাও লুকিয়ে রেখে তো কোথাও দেখিয়ে।
জন্ম থেকে মৃত্যু,
এমনকি তারও পরে
হু হু করে বিক্রি হওয়া যদি কিছু থাকে
তবে, তা হল ভয় ।
পুঁজি লাগে না, লগ্নিও না
শুধু লাভ, নির্ভেজাল লাভ !
ঈশ্বরের মত ছাঁচে-ঢালা, মৃত্যুর মত অমোঘ,
অমোঘ এতটাই যে,এর বিরুদ্ধাচরণও
তার মদত ছাড়া অসম্ভব !
পবিত্র পুস্তক বলে --
সবকিছু ত্যাগ করে শরণ নাও ভয়ের।
ভয়ই বহন করবে
তোমার সমস্ত অপ্রাপ্তির প্রাপ্তি
আর প্রাপ্ত সমস্ত কিছুর রক্ষার দায় !
_____________________________
মূল হিন্দি থেকে অনুবাদ : স্বপন নাগ
_____________________________
হূবনাথ পান্ডে:
হূবনাথ পান্ডে:
আধুনিক হিন্দি কবিতার জগতে হূবনাথ পান্ডে বহুচর্চিত একটি নাম। সামাজিক বৈষম্য, রাজনৈতিক নেতাদের নীতিহীনতা, জাতপাত ইত্যকার বিষয়ই তাঁর কবিতার উপজীব্য। ১৯৬৫ সালের ১৩ই এপ্রিল বেনারসে কবির জন্ম। 'লোয়ার প্যারল', 'মিট্টী', 'অকাল' প্রমুখ তাঁর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি কাব্যগ্রন্থ। কবি হূবনাথ পান্ডে মুম্বাই বিশ্ববিদ্যালয়ের হিন্দি বিভাগের অধ্যাপক।
0 Comments