সৌমী গুপ্ত'র অণুগল্প


হালখাতা 
সৌমী গুপ্ত 

গ্রামের বাজারের মুখেই দোকানটা নতুন খোলা হয়েছে।নাম পরিধান।পয়লা বৈশাখের দিন উদ্বোধন। সুবিমলবাবু সকাল থেকে ব্যস্ত।উপচে পড়া ভিড়ে ঠাসাঠাসি লোকজন। মাঝেমধ্যেই বাবার কথা মনে পড়ছে। নুন আনতে পান্তা ফুরনোর দিনে পয়লা বৈশাখ এলে বাবা হাত ধরে মালিকের দোকানে নিয়ে যেত। সারাদিন কাজকর্ম করতে করতে ক্ষুধার্ত চোখ চলে যেত সাজানো মিষ্টির প্যাকেটের দিকে। ক্ষিদেটা যখন মরে যেত তখন হাতে ধরিয়ে দেওয়া হত মাছি ভনভন করা মিষ্টির প্যাকেটটা।তাই গোগ্রাসে গিলত সে। 
বাইরে কাঠফাটা রোদ। সবকিছু সামলাতে গিয়ে সুবিমলবাবু ঘেমেনেয়ে একসা। এরইমধ্যে হইহট্টগোল শুনে বাইরে এসে দেখেন দোকানের একপাশে থরেথরে  রাখা  মিষ্টির প্যাকেটের দিকে জুলজুল করে তাকিয়ে থাকা জীর্ণ পোশাক পরিহিত ছেলেটিকে উদ্দেশ্য করে কয়েকজন তিরস্কার করছে,"কোত্থেকে এসে জুটেছে যত হাড়হাভাতে হ্যাংলা!" 
সুবিমলবাবু হুংকার ছাড়লেন ওখানে দাঁড়িয়েই,"এই ন্যাপা ভিতর থেকে একটা তিরিশের গেঞ্জি আর মিষ্টির প্যাকেট দে দেখি ছেলেটার জন্য...আর এইযে আপনারা একটু সরুন তো...এতক্ষনে আমার হালখাতা সফল হল।"

সাহিত্যিক সৌমী গুপ্ত
১৬২, রাইফেল ক্লাব রোড, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ











1 Comments