তখন সন্ধে নামলো ~ বিশ্বদীপ ঘোষের অণুগল্প


বিশ্বদীপ ঘোষের অণুগল্প 
তখন সন্ধে নামলো 

— "এ কী!"
—"সারপ্রাইজ,কেমন লাগছে বলো?" 
পূজা মৃদু গলায় বলল।
— "সেটা গবেষণার বিষয়,তবে,পাখির বাসার সঙ্গে কিছুটা মিল পাচ্ছি। "
— "খুব বাজে লোক তুমি,যা-তা বলো।"
— "আমি একমত,কিন্তু, পরশুও তো মাথায় ভূত চাপার কথা কিছু বললে না, পরে ফোনেও না।"
— "পাছে তুমি পথ অবরোধ করো।"
— "তাই বলে এক ধাক্কায় কালো ঘন জলপ্রপাত থেকে একেবারে...।"
পূজা মাথা নিচু করে বলল,"ইদানীং ওরা বড্ড অবাদ্ধ হয়ে গিয়েছিল,কিছুতেই বশে আনতে পারছিলাম না।"
পূজার এই সরল অজুহাতের আড়ালে থাকা নমস্তত্ত্ব বুঝতে তমালের বিন্দুমাত্র অসুবিধে হল না। কয়েক সেকেন্ড পূজার দিকে তাকিয়ে ওর ডান হাতটা চেপে ধরল তমাল। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে একটু ধরা গলায় বলল,"আসলে ওরা ছিল বিভিন্ন সময় ও বয়সের কালো রঙদের গোলাপি কথপোকথন,অনেকটা দৃষ্টি দূষণ থেকে বেরবার নকশাও বলতে পারো।জানো, এদের মধ্যে বিকেল বেলার কালো রঙটাই ছিল আমার সবচেয়ে প্রিয়,যে প্রথম আমার হাতে উপুড় করে দিয়েছিল প্রজাপতির ডাক, সেই রিংটোন আমি আজও বদলাইনি।"
—"তুমি কষ্ট পেয়েছো জানি,কিন্তু,আবার কবে জোয়ার আসবে জানিনা,ততদিনের জন্য না হয় কেড়ে নিও তোমার দেওয়া সব নদী। কথা দিচ্ছি,আর কোনও দিন তোমায় মনখারাপি বৃষ্টিতে ভেজাবো না।"

পূজাকে বুকে টেনে নেয় তমাল। আবেগ ঘন স্বরে বলে,"তোমার প্রথম কেমো নেওয়ার দিন আমি থাকব তোমার সাথে।"
পূজার চোখের জলে শহরে তখন সন্ধ্যে নামলো।

সাহিত্যিক বিশ্বদীপ ঘোষ
১৩৪/১এ , সাউথ সিঁথি রোড, কলকাতা





0 Comments