প্রশ্নচিহ্ন, এঁকে যাচ্ছে কোথাও ! ~ পলাশ দাসের কবিতা


প্রশ্নচিহ্ন, এঁকে যাচ্ছে কোথাও ! 
পলাশ দাস 

মাঝে মাঝে নিজেকে মানুষ বলে মনে হয় না 
এই ঘরের কোণ  এই বদ্ধ  হাওয়া  
আলো নেই আলো নেই 
শুধু চেনা মুখ আর আবছায়া 

ভুলে যাচ্ছি খোলা আকাশ 
মাটির গভীর আত্মীয়তা 
তবে কোথায় চলেছি 
কোন সে সুদূরের দিকে 
সূর্য ভুলে যাচ্ছি 
ভুলে যাচ্ছি জ্যোৎস্নার রাত 
জ্যোৎস্নার রাত খুব যে পার্থক্য গড়ে থাকে আমার জীবনে 
তা নয়, তবুও পাশে বসে 
একটু-আধটু গল্প করা 
যেমন করে পাশের মানুষ  
কার কাঁধে রেখে যাই হাতের স্পর্শ 

দিনকে হারিয়ে ফেলছি,  
রাত কেও ? 
খোলা ছাদে রাতের হাত থেকে নিয়েছি সুগন্ধি জুঁই 
আমি কখনও জানতে চাই নি 
কে কি কেন, 
কিংবা জুঁই ফুল রাত্তিরে ফোটে কিনা! 
হাত পেতে নিয়েছি শুধু 
এখন রাত চারিদিকে চেপে বসেছে 
ভালোবাসা কি কখনও অসহ্য হয় ? 
আমি সব গুলিয়ে ফেলছি 
আমি কী তাহলে আর মানুষ নই 
এই তথাকথিত মানুষের মত 
এই যাদের দেখা যায় রোজকার পথে  
আমি হাসি হারিয়ে ফেলছি 
মুখ চোখ হাতের আঙুল আমার চোখে ফুটে ওঠে না 
আর নখ 
আমি নখকে অলংকার মনে করেছি চিরকাল 
আঁচড়ে দেওয়ার জন্য নয় 

এখন শুধুই রাত, মুখ হারিয়ে যাচ্ছে 
হারিয়ে যাচ্ছে রাস্তা আলো হাওয়া 
আর এই মাটির স্নিগ্ধতা 
এই গৃহ কোণ ছাদের নিচে স্যাঁতস্যেঁতে হাওয়া 
খুব ইচ্ছা করে বুক ভরে শ্বাস নি 
দুহাত তুলে ছাদে দাঁড়াই 
দু'একটা স্পর্শ সংযোগ গড়ে উঠুক মেঘের সাথে   

কিন্তু রোজ মনে হচ্ছে আমি আর মানুষ নই 
আমি হাঁটতে ভুলে যাচ্ছি 
হাসতেও 

এই সাত ফুট বাই পাঁচ ফুট একটা ঘর 
এর বায়ু আমায় যেন কিনে ফেলেছে  
তাই ফুরিয়ে আসছে রোজ ফুরিয়ে আসছে 
রোজ বুঝিয়ে দিচ্ছে আমি আর মানুষ নই... 

কবি পলাশ দাস 
বারাসাত, উত্তর ২৪ পরগনা, পশ্চিমবঙ্গ









0 Comments