
উদয়ন চক্রবর্তী'র তিনটি কবিতা
বহ-মান এপিটাফ
ইষৎ লালচে গোধূলি রোজই
অনুভবে বৃষ্টি ঝরায় দিগন্তে
পাখিদের ডানায় সন্ধ্যের লুকোচুরি দেখে
অন্ধকার হেসে লুটোপুটি
হয়তো অন্য কোথাও -অন্য কোনো দিগন্তে
বৃষ্টি নামলো সবে-যেমন নেমেছে এর আগেও-
ডাঙার কুমির পা কামরে ধরলো আধফোটা ফুলের
চোখের জলে লবন জমে থাকে কেন ও বুঝলো না
জানলো চোখের জল একান্ত নিজস্ব সম্পদ
দূরে কোথাও ভেঙে গেল নক্ষত্রের সংসার।
এই পৃথিবীর প্রথম বৃষ্টিতে লেখা আছে
আমাদের অনুভবের ঠাকুরমারঝুলির গল্পকথা
সেখানেই চেনা যাবে আমাদের
খুঁজলে পাওয়া যাবে অনেক আগের কিছু জলছবি
লিপিবদ্ধ বহ-মান এপিটাফের কোলাজ
তাইতো এখনও সমুদ্র পাড়ে সূর্যাস্ত দেখি আমরা
পর্বত চুড়ায় তুষারে চোখ রেখে চেখে দেখি প্রাণের সাগরতটে আছড়ে পরা ঢেউয়ের মতো সূর্য্যদয় সূর্যাস্ত।
হয়তো এমনই হবে
জানি তো সবান্ধবে ভালোবাসা নিয়ে
পথিক হওয়া একটা কল্পনা
কাক জাগানো জোৎস্নায় জেগে ওঠে
ভুল সে ভুলেই দূরে সরে যায় পরিচিত মুখ,
অসময়ে কখনও ফুটে ওঠে ফুল
সেটা কোনও ভুল না কেবলই আকস্মিক
সত্য প্রকাশ হয়ে পড়া জানা জগত্ ছেড়ে,
লেন্সে ধরা পড়ে আমার জানার অস্মিতা ।
এক শতক পরে অসময়েও ফুল যদি ফোটে কখনও তখনো পৃথিবী হয়তো ধরে থাকবে সম্পর্ক,
ধরে রাখবে রূপান্তরিত প্রেম সময়ের জালে,
সবান্ধবে না হলেও পাশাপাশি থাকবে মানুষ।
যন্ত্র মানুষের সাথে লুকোচুরি খেলবে মানুষ
অসময়ের ফুল দেখার জন্য খুঁজবে কোনও
নতুন সাথী যে বলে দেবে ফুলের বা নতুন
পাখির ডাক যা দেখে শুনে হয়তো প্রেমে পড়েছিল পিতার পিতা লুকিয়ে কোনও ক্ষণে,
এমনই এ সিঁড়ি পথ উঠে গেছে উঠে যাচ্ছে
শূন্য থেকে শূন্যতার কাছে।
নদীর স্রোত মেপে
ধূপটা জ্বলছিল যেমন ও রোজ জ্বলে
নিজেকে নিঃস্ব করে
সেটা কী কারণে ওকে জ্বালানো হচ্ছে
না জেনেই ঈশ্বর নামের ভাস্কর্যের সামনে
কিংবা নিথর কোনও শরীরের কাছে বসে
ও জানে ওর কিছুই এসে যায়না
এ অবান্তর ব্যবহারের প্রেক্ষাপট।
এমন কত ধূপ দিন রাত নিরন্তর জ্বলে চলেছে নিজেকে দান করে ঠিক ফুলের
মতো দৈনন্দিন টোপ হয়ে বাজারি সভ্যতায়।
আমরা কাঙাল হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি এক কণা
অনুকম্পার ললিপপের আশায়
দুয়ারের যত দান সে তো আমাদেরই
সে কথা জানা নেই কত জীবনের কুয়াশায়
নিশিডাকা ভ্রমে হাতড়ে মরে ধূসর ছায়াপথে
ক্ষমতা নদীর স্রোত মেপে তরী ভাসায়।
0 Comments