শুভ্রাশ্রী মাইতির কবিতা


গর্ভাধান 

দিগন্তরেখার পাড় ঘেঁষে বন্ধ্যা নারীর মতো শুয়ে আছে মাটি অভিমানে---
গর্ভের অনন্ত শূন্যতা জুড়ে বাৎসল্য ক্ষুধার ভেজা ভেজা বেদন।
মাটি বন্ধ্যা হলেই আলপথ বরাবর দৃঢ় পায়ে হেঁটে আসে প্রেমিক কৃষক।
ধুলোমাখা লাঙলের ফলায় ধানীরঙা সূর্য ওঠাবে বলে
তার শক্ত হাতের স্নেহমুঠিতে আঁকা সবুজ বীজধান-জীবন।
নরম আদরের আশ্লেষে শরীরের পর শরীর খুললেই 
চাষীঘামে ভেজা লাঙলের কঠিন ফলা ধীরে ধীরে
নেমে আসে বৃষ্টিপিয়াসী মাটির অন্দরে।
উর্বরা হয় মাটি ভালোবেসে---
মাটি উর্বরা হলেই ঘাম-নুনের সিঁড়ি বেয়ে 
নগ্ন আকাশের বুক থেকে একরাশ জলভরা মেঘ 
পেড়ে আনে কৃষক আশ্চর্য প্রেমের সাধনে।
জুঁইফুলী বৃষ্টিতে ভিজে ওঠে মাটি--- 
গর্ভিনী মাটির সোঁদা গন্ধে ভারী হয় শস্যব্যাকুল বাতাস।
সৃষ্টির আনন্দে কৃষক ঈশ্বরের মতো হেসে উঠলেই 
সোনালী জমির সীমানা ঘেঁষে সেজে ওঠে নবান্নের উঠোন।
কৃষকের শিরা ফোলা হাত শুধু আশ্চর্য মিলন অক্ষরে  
বীজধানের নরম,সবুজ পাতায় পাতায় লিখে রাখে
এক অনির্বচনীয় গর্ভাধানের অলৌকিক ইতিহাস মাটিকে ভালোবেসে...

কবি শুভ্রাশ্রী মাইতি
মহিষাদল, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিমবঙ্গ















0 Comments