২৫শে বৈশাখ
শেখ আসমত
আমার একটি মাত্র পরিচয় আছে সে আমি কবি মাত্র।
২৫শে বৈশাখ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের পবিত্র জন্মদিবস।এই পবিত্র দিনটি তাঁর রৌদ্রের আঁচলে একদিন পরম স্নেহে রবি -কবি কে বরণ করে নিয়েছিল এই পৃথিবীতে।এই ২৫শে বৈশাখ তাই চিরনতুন,চির অম্লান।২৫শে বৈশাখ প্রতিবছরই ফিরে ফিরে আসে এবং ডাক দেয় সেই চিরনতুন কে।চির নতুনের দিল ডাক ২৫ শে বৈশাখ।
কবিশ্রেষ্ঠ রবীন্দ্রনাথ বর্তমান বিশ্বের এক বিরাট বিস্ময়। কেবল কবিশ্রেষ্ঠ হিসেবেই নয়,সর্বশ্রেষ্ঠ চিন্তাবিদ রূপেও তিনি সারা বিশ্বে সম্মানিত।মানব জীবনের এমন কোন চিন্তা নেই,এমন কোন অভাব নেই,যেখানে তিনি বিচরণ করেন নি,বা নতুন দিগন্তের উন্মোচন করেননি।তিনি মানুষের চিরন্তন সুখ-দুঃখ আনন্দ-বেদনার পালা গান রচনা করে গিয়েছেন। তার কাব্যে ব্যথাহত পাবে ব্যথা বিজয়ের প্রেরণা, দার্শনিক পাবেন প্রকৃত সত্যের সন্ধান, রাজনীতিক পাবেন নির্ভুল পথের নির্দেশ, মৃত্যুপথযাত্রী পাবেন মৃত্যুঞ্জয়ী সান্তনা।এক কথায়,এই দুঃখ দ্বন্দ্বময় নৈরাশ্য পিরিত যুগে রবীন্দ্রনাথ ই আমাদের একমাত্র কল্পবৃক্ষ।আমরা রবীন্দ্রনাথের ভাব তরঙ্গে অবগাহন করি, তার চিন্তা ধারায় চিন্তা করি,তার সুরে গান গাই, তার ভাষায় কথা বলি।আমরা রবীন্দ্রনাথেই মরি ও বাঁচি।
রবীন্দ্রনাথ ভারতীয় ভাব সাধনার মূর্ত বিগ্রহ। তার মধ্য দিয়েই ভারতের বেদ উপনিষদ থেকে ব্যাস.. বাল্মিকী.. কালিদাস.. বৈষ্ণব কবি এবং নানা সাধকের সাধনা মূর্ত হয়ে উঠেছে।সে দিক থেকে তিনি যদি ভারতের গঙ্গা নদী হন,তবে ২৫ শে বৈশাখ গঙ্গোত্রী।আমার গঙ্গা পূজি গঙ্গা জলে।রবীন্দ্রনাথের স্মৃতি পূজার প্রধান উপাচার তাই রবীন্দ্র সংগীত,রবীন্দ্র কাব্য,রবীন্দ্র সাহিত্য এবং রবীন্দ্রনাথের কালজয়ী নাটক সম্ভার।
তুমি কি কেবলই স্মৃতি,শুধু এক উপলক্ষ্য কবি?
হরেক উৎসবে হৈ হৈ, মঞ্চে মঞ্চে কেবলই কি ছবি?
তুমি শুধু পঁচিশে বৈশাখ, আর বাইশে শ্রাবণ?
কালবৈশাখীর তীব্র অতৃপ্ত প্রতিভা,বাদলের প্রবল প্লাবন,
এ সবই শুধু বৎসরান্তে এক দিনেই নির্গত নিঃশেষ?...”
পশ্চিম ভাঙ্গনমারী, খেজুরী, পূর্ব মেদিনীপুর
0 Comments