১৮ ইঞ্চি টিভি
সিদ্ধার্থ সিংহ
ক্যুরিয়ারের ছেলেটা ঢাউস ঢাউস দুটো প্যাকেট নিয়ে আসতেই উৎফুল্ল হয়ে উঠল নবীন।
লকডাউনের আগে প্রচুর মাল প্রোডাক্ট হলেও লকডাউনের জন্য সেগুলো আর বিক্রি হয়নি। তাই গোডাউন ফাঁকা করার জন্য সেই কোম্পানিটি বিজ্ঞাপন করেছিল, বারোশো টাকায় তাঁরা টিভি দেবে।
বারোশো টাকায় টিভি! যত ছোটই হোক না কেন, এর চেয়ে সস্তা আর কিছু হতে পারে না। থাকুক না বাড়িতে বাহান্ন ইঞ্চি টিভি। তাতে কি! না-হয় বাথরুমেই রাখব।
কিন্তু এটা চলবে তো! বিজ্ঞাপনে দেওয়া নাম্বারে ফোন করেছিল নবীন। ও প্রান্ত থেকে বলেছিল, চলবে না মানে? অবশ্যই চলবে। না চললে সঙ্গে সঙ্গে ফেরত।
তাই আর কালবিলম্ব করেনি সে। একটা নয়, একসঙ্গে দু'-দুটো অর্ডার করে দিয়েছিল। সেই টিভি কুরিয়ারের মাধ্যমে এখন তার দোরগোড়ায়।
আর তর সইছিল না তার। সই করে প্যাকেট দুটো নিয়ে ঘরে ঢুকেই তাড়াতাড়ি খুলতে শুরু করেছিল একটার মোড়ক।
এত যত্ন করে পাঠিয়েছে! খুলছে তো খুলছেই। মোড়ক আর শেষ হয় না। সেফটির জন্য এত থার্মোকল দিয়েছে যে, খুলতে খুলতে পাশে স্তুপাকৃতি হয়ে গেছে। তবু মোড়কের যেন আর শেষ নেই।
শেষ পর্যন্ত খোলসের ভেতর থেকে যখন টিভিটি বেরিয়ে এল তখন দেখা গেল সেটা খুব বেশি হলে ১৮ ইঞ্চি টিভি। এলইডি টিভির চেয়েও পাতলা।
কিন্তু সুইচ-টুইচ তো কিছুই নেই! চলবে কী করে! দেখে মনে হচ্ছে, একটা অ্যাক্রেলিক শিটের ওপরে সাঁটানো রয়েছে টিভির ছবি আঁকা ভিনাইল স্টিকার।
যখন সে হাতে নিয়ে ওটা ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে ভাল করে দেখছে, তখনই তার চোখে পড়ল সেটার একেবারে নীচে ছোট ছোট চারটি চাকা। আর সেখানে একদম গুড়িগুড়ি অক্ষরে লেখা--- ঠেললেই চলবে। না চললে ফেরত।
1 Comments
লোক ঠকানো আইডিয়াটা কিন্তু দারুণ
উত্তরমুছুন