মায়ের আদর্শ ~ বিমল মণ্ডলের অণুগল্প

 
বিমল মণ্ডলের অণুগল্প
মায়ের আদর্শ

—কি রে কাঁদছিস কেন? 
— মায়ের জন্য।
—জানেন বাবু কতদিন আমার মা আমায় ছেড়ে চাঁদের দেশে চলে গেছে। সেই দিন থেকেই আমি একা। 
— জানিস, এই যে গোটা পৃথিবী দেখছিস- তোর যে চোখের জল তার কেউ মূল্য দেবে না রে।আর তা ছাড়া মা কি কারোর চিরকাল বেঁচে থাকে? তাই চল তোকে বাড়ি রেখে আসি।

— না, আমি বাড়ি যাবো না। আমাকে বাড়িতে কেউই ভালো বাসে না।শুধু মায়ের আদর্শ নিয়ে একটুখানি বেঁচে থাকতে চাই।
— তুই কি করতে চাস বল আমায়। আমি তোর পাশে থাকার চেষ্টা করবো। 
আসলে রামেশ্বরও বাবা ও মাকে হারিয়ে একা থাকে। একটা ঘরও বানিয়েছে।সংসারও করেনি।তাই মা হারা ছেলেটিকে দেখে  তারমধ্যে যেন অপত্য স্নেহ জন্মলাভ করেছে। তাই ছেলেটিকে সন্তান হিসেবে মনে মনে স্বীকার করে নিয়েছে। তাই বারবার ছেলেটিকে জিজ্ঞাসা করতে থাকে—

—  কি রে বল?  তোকে সব রকমের সাহায্য করবো আমি।
— সত্যি বাবু? আমার পাশে থাকবে? 
— বললাম তো! বল তুই কি চাস?
— আমি আর বাড়ি যাবো না বাবু। তোমার কাছেই থাকব। আমি শুধু মায়ের আদর্শে বড়ো হব।কি বাবু পারবে তো?
— মা তো মা-ই। মা-র মত কি তোকে মানুষ করতে পারব? তুই আজ থেকে আমার কাছে থাকবি।আজ থেকেই দুজনই মায়ের আদর্শে বড়ো হব। কি তাই তো? 

ছেলেটি রামেশ্বর বাবুর বুকে মাথা রেখে হাউ হাউ করে কাঁদতে থাকে। রামেশ্বরও ছেলেটিকে বুকে জড়িয়ে ধরে ভবিষ্যতে মায়ের আদর্শের এক স্বপ্ন দেখেতে দেখতে ঘুমিয়ে পড়ে। 

                           
      সাহিত্যিক বিমল মণ্ডল 
               কাঁথি, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিমবঙ্গ

















 

0 Comments