রাগীব আবিদ রাতুলের অণুগল্প
রাস্তা
রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে হরণের মনে হলো,সময় ঘুরছে-ফিরছে শুধু। এই রাস্তায় এলেই সে একটা গন্ধ পায়,তাই এই রাস্তার নামকরণ করেছে সে গন্ধরাজ। এই রাস্তা ধরে হাঁটলেই তার বড় হওয়ার ; ইচ্ছার ব্যথাটা —প্রশমিত হয়, এক সময় অবশ হয়ে যায় যেন।আজ যেমন মনে হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের কথা তার;প্রায়ই সে নিজেকে এই রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে ভাবে— এই জন্ম-মৃত্যু কিছু নয়,সব কিছুই এই পথে শেষ হবে তার। সে তার কপালের উপর হাঁটছে।
গৌতম বুদ্ধ তাকে ভাবালেও —সে ভাবের ঘরেও; ভন্ড থাকতে চায়। বুদ্ধ হলে এই রাস্তা তার গন্তব্যের শেষ নয়,তাকে এই রাস্তা অতিক্রম করে যেতে হবে। কিন্তু হরন তো এই রাস্তাতেই ঘুরপাক খাচ্ছে,এই তার নিয়তি।
সে তার কপালের উপর হাঁটছে, কপাল অতিক্রম করবে কি করে।আজ কলেজ ফেরার পরেও সে এই রাস্তায় নেমেছিলো।বাসা থেকে বের হলেই সে এই রাস্তায় গিয়ে উঠে। বুদ্ধ হওয়া তার সম্ভব নয়,এই ভাবতে ভাবতেই সে নিশির কথা ভেবে বসলো। নিশি আর বুদ্ধ ত দুই মেরুর,এই দুই মেরু তাকে টানছে। নিশির টান টা বেশি,নিশিকে সে ভালোবাসে প্রচুর।যদিও এখন ভালোবাসাটা চুমুতে আটকে গেছে, এই রাস্তার উপরেই সন্ধ্যায় মাগরিবের আজানের পরে,যে সময়টা হঠাৎ কেমন স্থিতিশীল, নির্জীব,ঠিক তখনই এক গাছের পেছনে চুমু খেয়েছিলো সে নিশিকে, সব নির্জনেও তারা ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ার ভেতর ছিলো। এরপর থেকে সে এখন আর নিশির জন্য পুরো দুপুর বা বিকেল থেকে সন্ধ্যা, দেখবার বা কথা বলার জন্য অপেক্ষা করে না। এখন দুজনেই ঠিক মাগরিবের নামাজের, পরবর্তী সময়ের অপেক্ষায় থাকে।যদিও কথাটা কেউ কাউকে জানায় নি,কেউ কাউকে বলে নি এই সময় থাকার জন্য।নিশি এখন ওই সময়টাতেই যেন থেমে যায়,হরণ আসে। রাস্তা ধরে এখনো হাঁটছে হরণ —এই রাস্তার শেষ সীমানা তার শেষ গন্তব্য,এই রাস্তার শেষেই নিশির বাড়ি। তার পরেই অনন্ত পথ।
1 Comments
সুন্দর
উত্তরমুছুন