মা-বিষয়ক ~ সুকান্ত মণ্ডলের কবিতা


সুকান্ত মণ্ডলের কবিতা 
মা-বিষয়ক 

সব ছেলেই বাবার চেয়ে মাকেই বেশি ভালোবাসে
আমার ক্ষেত্রেও তাই
মাকে ছাড়া কিছুতেই থাকতে পারতাম না
মা কোথাও গেলে ঘরের কোণে মুখ গুঁজে কাঁদতাম।

আমি আর কাঁদি না
বাড়ি থেকে মেসে এলে এখন মা কাঁদে।


এখনও মাঝে মাঝে মায়ের কোলে
মাথা রেখে ঘুমোতে ইচ্ছে হয়।

বিছানায় মা আসেনি বলে
তখনও আমার চোখে ঘুম আসেনি
এইজন্য প্রতিরাতেই মায়ের বকা খেয়েছি।

আসলে মায়ের গায়ের গন্ধই ছিল
                         আমার প্রতিরাতের নিদ্রাদেবী।


প্রতিসন্ধ্যায় মা মন্দিরে প্রদীপ দেয়
আমাদের মঙ্গল কামনা করে।
মা বলে মন্দিরে ভগবান থাকে
আমি মন্দিরে ভগবান দেখিনি কোনোদিন

মায়ের আঁচলের নিচেই লুকানো দেখেছি ভগবান।


'বাপন' থেকে হয়ে গেছি 'বাপ'
শেষের 'ন'টা কোথায় হারিয়ে গেল যেন!
মা এখন আমাকেই বাবা বলে ডাকে
বাবার যে কত দায়িত্ব তা বাবারাই বুঝে।

বাচ্চাদের মতো মা তার বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে।


মায়ের দিকে তাকাতে গেলেই
আত্মার কঠিন অসুখে শরীর ফুঁপিয়ে কাঁদে
স্নান শেষে প্রসাধন ঘরে দেখি
নিজেকে দেখার কোন আয়না নেই।

মা আসলে বেঁচে থাকার কথা ভাবে
ভাবে, কীভাবে এই বিশ্ব সংসারে টিকে থাকা যায়!

কিন্তু যে কাঠ নিয়মিত পুড়ে
                             তাতে আর কতটা জ্বালানি?

মা জানালায় দাঁড়িয়ে দেখে মেঘেদের হল্লা
খোলা জানালায় ঢুকে পড়ে হাওয়া,
অন্তরমহলে শুরু হয় খেলা—হিউম্যানিটি
সাইড বাই সাইড হিউমিডিটি।

মা'র অলীক আলোয় ভেজা স্বপ্ন
                    এভাবেই ঘুমের অধ্যায়ে জাবর কাটে।

কবি সুকান্ত মণ্ডল 
মালদা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত
















0 Comments