হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কবিতা
সিঁড়ির অন্ধকার জলঘরে কয়েকটি পা
১০
গাছপালার ভেতর দিয়ে তুমি হেঁটে আসছো। এক একটা গাছের পাশে তোমার দীর্ঘ দেহ জলভরা মেঘের মতো। ঝরে পড়লে আরও সবুজ হয়ে যাবে ছাদ। ছবিঘরের বারান্দায় আমি অস্থির হয়ে উঠি।
১১
অনেকগুলো বছর ধরে স্টেশনে দাঁড়িয়ে আছি। যে মুখগুলোকে দেখার জন্যে দাঁড়িয়ে থাকি তারা কেউ আসে না। হয়তো সেগুলো আমার কল্পনার মুখ। হঠাৎ করে বৃষ্টি এলে সবাই আমার গা ঘেঁষে এসে দাঁড়ায়। পুরোনো স্টেশনের কোনো কোনো মুখকে বৃষ্টিতে হেঁটে যেতে দেখি। বুঝতে পারি, আজকের মতো অনেক বৃষ্টির গল্প তাদের ঝুলিতে আজও ভীষণ ভাবে বেঁচে আছে।
১২
আলো যতো কমে আসে তোমাকে স্পষ্ট দেখতে পাই। খালি চোখে কোনোদিন তোমাকে দেখিনি। কুঁড়ের পাশ দিয়ে যতটুকু রাস্তা সেটাকেই পৃথিবী চলাচলের পথ বলে মনে হতো। ঠিক - ভুল, পাওয়া না পাওয়ার হিসাবে না গিয়ে মনে হয় তোমাকে খোঁড়া ভীষণ জরুরী। আমারই প্রয়োজনে বাকি পথে ছিঁটেফোঁটাও যদি বৃষ্টি পাই তাহলে অন্তত বোঝা যাবে সোজা তাকালেই যাকে দেখা যায় এমন সহজ পথে যার বসবাস তাকে তার নিজস্ব আলোতেই পড়া ভালো।
১৩
খুব ভোর ভোর উড়ে যাই। ডানা ভিজে গেলে স্টেশনে এসে বসি। পুঁটলি খুলে দেখি একটি সাদা পাতা। কোথাও কিছু লেখা নেই।
১৪
আমি ভুলে গেছি তোমার নক্ষত্রের কথা। জাল বুনে যতটুকু সুতো পড়ে আছে ওই সামান্যতেও আমাকে আদ্যপান্ত বেঁধে ফেলা যায়। আমার তো কোনো শরীর নেই। পথ চলতে এতো হিজিবিজি মাথায় ঢুকে গেছে যে তোমার নক্ষত্র আজ আবছা।
1 Comments
ভালো লাগল।
উত্তরমুছুন