🍃 শেষ কথা কে কবে 🍃


🔸অণুগল্প:

      📚 সুমিতা মুখোপাধ্যায় 🔹আসানসোল 🔹



🔵 চারিদিকে রঙের আগুন ।
মাস টা ফাল্গুন। গ্রামের রাস্তায় একাকী ঘুরছে দিয়াশা।মামার বাড়ি এসেছে সে। শহরের বাইরে এলে পৃথিবী টাকে যেন অন্যরকম লাগে। সামনে দুটো সুউচ্চ দেবদারু গাছ,তার ফাঁক দিয়ে অস্তমিত সূর্যের রঙিন  আভা পলাশ আর শিমুলের বুকে এসে পড়ছে। দিয়াশার মন গেয়ে ওঠে, "ও পলাশ ও শিমুল কেন এ মন মোর রাঙালে "। দিয়াশার মন যে এখন রঙিন  হয়ে আছে। দিগন্ত আসছে। আর কিছুদিন পরেই ওদের মহামিলন।বড় অফিসের এক্সুকিউটিভ সে,অফিস তাকে এখন পাঠিয়েছে  বিদেশ। মাস খানেক পরেই ফিরবে সে। এই তো কালকেই কত কথা হল।
ভাবতে ভাবতে অনেক দূর  চলে এসেছে দিয়াশা।
কি মুস্কিল কত দূর  এসে গেছে সে। চারিদিক কেমন অচেনা লাগে।
সন্ধের অন্ধকার  ছুঁয়ে যেতে  শুরু করেছে। হঠাৎ  দূরের  আলো আধাঁরি থেকে ওর নাম ধরে কেউ যেন  ডেকে  ওঠে। ও এগোতে থাকে,চেনা গলা ।
দিগন্ত না..
হ্যাঁ  তাইতো।
কিন্তু কি ভাবে সম্ভব। এতোটা দুষ্টুমি কি সে করতে পারে। তাকে না জানিয়ে কখন সে এসেছে। এগিয়ে চলে দিয়াশা। যত এগোয় দিগন্তের গলা যেন হাওয়ায়  মিলিয়ে যেতে  থকে। প্রানপণে ছুটে
সেই জায়গায় পৌঁছতে চায় দিয়াশা। গাছের শিকড়ে পা আটকে ছিটকে মাটিতে পরে সে।
অসহ্য ব্যাথায় কেঁদে ওঠে সে। সব কিছু যেন  অন্ধকার হয়ে যায়। একটা ঝাঁকুনিতে চোখ মেলে দিয়াশা। দেখে বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে আছে সে,বড় মামি তার মাথায় হাত রাখে। দিয়াশা বোঝে সবটাই স্বপ্ন। মামিকে দুহাতে জড়িয়ে ধরে ডুকরে কেঁদে ওঠে সে। সব কিছু যে তার ওলট পালট হয়ে গেছে। বিদেশ থেকে দিগন্ত ফিরেছে সত্যি,
কিন্তু সাথে এনেছে এক মারণ রোগ ।
যার পোশাকি নাম কভিড ১৯ ৷ কয়েকদিন কোয়ারেন্টাইন এ থেকে ধরা পরেছে এই রোগ। এখন সে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে মৃত্যুর সঙ্গে  লড়াই করছে। দিয়াশা জানেনা তার জীবনে কি ঘটতে চলেছে এখন । তার সামনে / তাদের সামনে এখন এক অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ ।
চোখের জল মুছে দিয়াশা গায়-
" নয়ন তোমায় পায়না দেখিতে, রয়েছো নয়নে নয়নে ।
হৃদয় তোমারে পায়না জানিতে, হৃদয়ে রয়েছো গোপনে "

1 Comments