ঋভু চট্টোপাধ্যায়ের ছোটগল্প


সাত বছর পর

প্রায় সাত বছর পর অভ্র সন্দিপদের পাড়ায় পুজো দেখতে এসেছেএটাকে পুজো দেখতে না আসা বলে খুঁজতে  আসাও বলা গেলেই ভালোএখনো পুরানো দিনের সব ঘটনা এক্কেবারে স্পষ্টএই পাড়াতে অভ্রদের কেউ থাকে নাসাত বছর আগেও কেউ থাকত নাওদের বাড়ি বর্ধমানের একটা গ্রামে হলেও থাকত দমদমের এক নম্বর গেটের কাছে ইটালগাছাতেতার দাদুর আমল থেকে ওখানেই বাসসেই বছর পুজোর মাস তিন আগে অভ্রদের হায়ার সেকেণ্ডারির রেজাল্ট বের হলওর রেজাল্টটা ভালো থাকার জন্যে শহরের একটা নামি কলেজে এক্কেবারে ফিজিক্সে অনার্স নিয়ে ভর্তি হয়ে গেলজেনারেলের লিস্টে সেবছর অভ্রর ফাস্ট লিস্টে চার নম্বরে নাম ছিলসেই কলেজেই প্রথম সন্দিপের সাথে আলাপও থাকত দক্ষিণ কলকাতায় লেক গার্ডেন্সেকোন একটা কারণে সে বছর অভ্রদের গ্রামের বাড়িতে পুজোর সময় যাওয়া না হলেও চতুর্থীর দিন থেকেই কলকাতার পুজোতে মেতে উঠেছিলপ্রথম বছর কলকাতার পুজো এক্কেবারে চেটে পুটে উপভোগ করবার চেষ্টা করছিলবাবা মা বাধা দেয়নিতবে একটা শর্ত ছিল,‘যতখুশি ঘোরোকিন্তু সন্ধের আগে এই পাড়াতে চলে আসতে হবেএরপর পাড়াতে সারাটা রাত থাকলেও আপত্তি নেই’ অভ্র এই প্রস্তাবটাতে কোন আপত্তি করেনি।একদিন পাড়ার বন্ধুদের সাথে, একদিন পুরানো স্কুলের বন্ধুদের নিয়ে পালি করে ঘুরেছে, বাইরে খেয়েছে, এক্কেবারে ফুলটুস মস্তি।

সে বছরেই অষ্টমীর দিন বন্ধু সন্দিপের আমন্ত্রণে সোজা দক্ষিণ কলকাতার ঢাকুরিয়া চলে এসেছিল। অভ্র প্রথমে রাজি হয়নিছোট থেকেই কলকাতাতে থাকলেও দক্ষিণ কলকাতাটা সেরকম ভাবে চেনে নাএই জায়গাটা ভালোও লাগে নাখুব ব্যস্ত আর কৃত্রিম মনে হয়বাসরুটটাও সেরকম ভাবে চেনে নাতাই দমদম থেকেই ট্যাক্সিতে রবীন্দ্র সরোবর মেট্রো স্টেশনের কাছে নেমে সেখান থেকেই বাইকে সন্দিপ ওদের পাড়াতে নিয়ে যায় নিমন্ত্রণ করবার সময় সন্দিপ বলেও ছিল,‘না এলে কিন্তু পস্তাবিআমাদের পাড়ায় যা সুন্দর মেয়ে আছেএকবার দেখলে তোর মুখের ভূগোলটাই চেঞ্জ হয়ে যাবে

মেয়েদের ব্যাপারে অভ্র অতোটা হ্যাংলা নয়এই বয়সের একটা ছেলের যতটা আকর্ষণ থাকে তার থেকে বেশি কিছু নয়সেই কোন ছোট থেকে কো-এডুকেশন স্কুলে পড়ছেঅনেক মেয়েই তার খুব ভালো বন্ধুবাড়িতে অনেকের যাতায়াত থাকলেও কোন বিশেষ কেউ তখনো সেই অর্থে তৈরী হয় নিকলেজে ফাস্ট ইয়ারে যে সব মেয়েদের সাথে আলাপ হয়েছে তারাও বন্ধুস্বভাবতই সন্দিপের কথা শুনে একটু মুচকি হেসে বলে ওঠে,‘মেয়ে দেখে দেখে চোখে ন্যাবা হয়ে গেছেএখন কাউকে আর আলাদা লাগে না

অভ্রর কথাগুলো শুনে সন্দিপও হাসতে হাসতে উত্তরে বলে,‘তুই কি রকম যেন পেসিমিস্ট হয়ে গেছিসএই জন্যেই তোকে আমাদের পাড়াতে আসতেই হবে’ অভ্র সে বছর সন্দিপদের পাড়ায় অষ্টমীর দিন সকালে গেছিলকথামত দুজনেই সেদিন পায়জামা পাঞ্জাবি পরেছিলসন্দিপ অভ্রর সাথে পাড়ার সব বন্ধুর সাথে একে একে আলাপ করিয়ে দেয়প্রথমে ওদের মাঝে একটু অগোছালো লাগলেও আস্তে আস্তে নিজেকে খুব সুন্দর ভাবে মিশিয়ে নিয়েছিলশুধু মিনিট পনেরো অভ্রকে মাঠের এক পাশে আলাদা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছিলমণ্ডপ ছাড়া বাকি মাঠে তখন চ্যাটচ্যাটে রোদঅভ্র একটু সরে একটা গাছের নিচে রাখা বেদীর নিচে বসেসন্দিপও তার বন্ধুদের গ্রুপটা সেই সময় অঞ্জলি দিতে গেছিলঅভ্রদের নিজেদের বাড়িতে পুজো হলেও সে নিজে এবং তার বাবা কোন দিনই অঞ্জলি দেয় নাওর মা অবশ্য নিয়ম করে সব পুজো করে যায়অভ্র এই সময় একটা জায়গায় বসে চোখ ঘুরিয়ে সন্দিপের বলা কথাগুলো মিলিয়ে নিচ্ছিলপাড়াটাতে যেন সুন্দরী মেয়েদের কারখানাতার ওপরে সবাই আবার খুব সুন্দর ভাবে সেজেছেকি রকম যেন দিশেহারা লাগছিলহঠাৎ মণ্ডপের বাঁ পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটা মেয়ের দিকে অভ্রের চোখ দুটো আটকে গেলমেয়েটা ওর থেকে হাত থেকে হাত পঁচিশ দূরে দাঁড়িয়ে ছিল অভ্রর মনের ভিতর কোথাও পড়া কবিতার একটা লাইন ভেসে বেড়াতে লাগলএখানে এই ভীষণ রোদেও একপশলা মেঘবৃষ্টি হয়ে ভিজিয়ে দিয়ে যাও

অনেকক্ষণ একভাবে মেয়েটাকে দেখলএই সময়ের অন্য মেয়েদের থেকে একটু অলাদা মনে হলমেয়েটি খুব বেশি সাজেনি তাও তাকে দেখে অভ্রর নিজের গ্রামের কথা মনে হবার পাশে সেই ক্যাসুয়েল বিউটির থেকে চোখ ফেরাতে পারল না মেয়েটার চোখে চোখ পড়তেই অভ্র বেশ অপ্রস্তুত হয়ে পড়লতাড়াতাড়ি চোখদুটো নামিয়ে আড় চোখে দেখতেই বুঝতে পারল মেয়েটাও মুচকি হাসছেঅভ্র একটা মানসিক শক্তি পেলএক্কেবারে সোজা তাকাতেই আবার মেয়েটির চোখে চোখ পড়ে যেতেই বুঝতে অসুবিধা হল না মেয়েটিও মজা পাচ্ছে অভ্রর এক বন্ধুর বলা কয়েকটা কথা মনে পড়ে গেল,‘ঝারি মারবার সময় মেয়েটি যদি বুঝতে পেরে হাসেবুঝবি মেয়েটিও মজা নিচ্ছে’  

অভ্রর মেয়েটির সাথে কথা বলতে ইচ্ছে হলএকটু পরেই আবার নিজেকে বোঝালো,‘অন্য পাড়াএক্ষুণি কি থেকে কি হবেসমস্যার এক শেষ’ কিছু সময়ের মধ্যে মণ্ডপের ভিতর থেকে সন্দিপদের বেরিয়ে আসতে দেখে নিজেকে আরো সংযত করে নিলসন্দিপ অবশ্য এসেই অভ্রর কাঁধে হাত রেখে বলে উঠল, ‘ কিরেকি করছিলি এতক্ষণআমাদের পাড়ার কাউকে পছন্দ হলডেটিং করবি নাকি?’ অভ্র লজ্জা পেয়ে সামনে তাকাতেই সন্দিপও ঘাড় ঘুরিয়ে প্যাণ্ডেলেও পাশ দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটিকে দেখে বলল, ‘তা বাবুর এতক্ষণ এই চলছিল

চিনিস?

-কেন চিনব নাডাক নাম তিন্নিভালো নামটা ভুলে গেছিসামনের বছর এইচএস দেবেতবে মেয়েটি আমাদের পাড়ার নয়ওর কাকু আমাদের পাড়ার পুজোর কমিটির সেক্রেটারি সেই সূত্রেই পুজোর চারদিন আমাদের পাড়াতেই থাকে

কথাগুলো শেষ করেই অভ্রের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল,‘আলাপ করবিডাকবো তবে গুরু আমাদের পাড়ার অনেকেরই ওর প্রতি একটা ক্র্যাশ আছে

অভ্র ঘাড় নেড়ে বলে,‘না বাবাদরকার নেই

-তা হয় নাকিআমাদের পাড়াতে তোকে নিমন্ত্রণ করে আনলামখালি হাতে ফিরবি ?

কথাগুলো শেষ করেই সন্দিপ মেয়েটির দিকে তাকিয়ে বলে উঠল,‘এই তিন্নিঅঞ্জলি দিবি না?’

– নাগো আমাদের কালা অশৌচ চলছে

-হ্যাঁ হ্যাঁ প্রদীপ কাকু বলছিলেনঅতো দূরে দাঁড়িয়ে আছিস কেনএদিকে আয়আড্ডা মারি

মেয়েটি কাছে আসতেই সন্দিপ অভ্রের সাথে আলাপ করিয়ে দিলঅভ্র টুকটাক কথাও বললতবে মেয়েটির সেই মুহূর্তে কোন একটা কাজ থাকবার জন্যে তাড়াতাড়ি চলে যেতেই সন্দিপ বলে উঠল,‘গুরু প্রথম দিনের জন্যে এনাফএর বেশি আজ আর না

অভ্র সেদিন সন্দিপদের পাড়াতে আরো কিছু সময় থাকেসন্দিপ ও তার পাড়ার অন্যদের সাথে কথা বলবার ফাঁকে  আড় চোখে মেয়েটির হাঁটা চলাকথা বলার ভঙ্গী সব লক্ষ্য করেছে মাঝে মাঝে অন্য মনস্কও হয়ে যাচ্ছিলবাড়ি ফিরেও বুঝতে পারল ঐ তিন্নি নামের মেয়েটা মনের মধ্যে একটা অদ্ভুত পরিস্থিতির সৃষ্টি করে দিয়েছেঘুমের মধ্যেও স্বপ্নে এসেছেএমনকি পুজোর অন্য দিনেও সন্দিপকে ফোন করে অন্য কথা বলার ফাঁকে তিন্নির কথা জিজ্ঞেসও করেছে,‘পুজোর পর তোদের পাড়াতে আবার যাবোতুই মেয়েটার সাথে দেখা করানোর একটু ব্যবস্থা করে রাখবি

লক্ষ্মীপুজোর পর অবশ্য পুরো হিসাবটা এক্কেবারে বদলে গেলঅভ্রর বাবা একদিন অফিস থেকে বাড়ি এসে বলেন,‘একটা খারাপ খবর আছে

অভ্রও তার মা দুজনেই একটু ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করল, ‘কি এমন খারাপ খবরতুমি এতোটা আপসেট হয়ে গেলে

আমার কর্ণাটকের হেড অফিসে ট্রান্সফার হয়ে যাচ্ছেঅভ্রের বাবা একটা রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের অফিসারএতদিন এই রাজ্যের বিভিন্ন জেলাতে পোস্টিং হলেও বহু কষ্টে রাজ্যের বাইরে ট্রান্সফারটা আটকে রেখেছিলেনকিন্তু ব্যাঙ্কের কি একটা নিয়মে এবার বাইরের রাজ্যে যেতেই হবেনা হলে প্রমোশনও হবে নাএর আগে বাবা কলকাতার বাইরে ট্রান্সফার হলেও সপ্তাহে কলকাতাতে আসততারপরে দেশের বাড়িটার খবরও রাখতে হবে এখন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আলাদাঅভ্রদের সিদ্ধান্ত নিতেই পুরো একটা সপ্তাহ কেটে গেলশেষে আর কোন উপায় না পেয়ে কলকাতার বাড়িটাতে এক কাকাকে থাকতে দিয়ে ব্যাঙ্গালুরু যাওয়ার সিদ্ধান্তটাই নিতে হলঅভ্রর মা প্রথমটাতে একটু নিমরাজি থাকলেও পরে বাবা মাকে বোঝায়,‘ওখানে চাকরি থেকে পড়াশোনা সবের স্কোপ অনেক বেশিঅভ্রর এই ফাস্ট ইয়ার আমি ওখানে ঠিক একটা ব্যবস্থা করে কলেজে ভর্তি করিয়ে দেবোওর কোন অসুবিধা হবে না

বাবার ডিশিসনের পরেই মাবাবা অভ্র তিনজনেই কলকাতা ছাড়ে

দেখতে দেখত কেটে গেল সাতটা বছরএই সাত বছরে অনেক কিছুর পরিবর্তন হয়ে গেছেঅভ্রর বাবা চাকরি থেকে রিটার্য়াড করেছেনঅভ্র এখন একটা বেসরকারী কলেজে চাকরিতে জয়েন করেছেকিন্তু এর মধ্যে একটা বিপর্যয়ও হয়েছেঅভ্রর মা মারা গেছেনবাড়িতে দুটো কাজের লোক থাকলেও বাবা এখন অভ্রর বিয়েতে জোর দিচ্ছেকলকাতার বাড়িটাতে অভ্রর এক কাকা থাকেনঐ বাড়িটাকে বিক্রি করে দিয়ে এই ব্যাঙ্গালোরেই পাকাপাকি ভাবে থাকবার পরিকল্পনা করেছেমা মারা যাওয়ার পরে বাবা আর কলকাতাতে ফিরতে চাননি কলকাতার কথা বলতেই বাবা উত্তরে বলে,‘ওখানে গেলেই তোর মায়ের কথা মনে পড়ে যাবেভালো লাগবে না’ তবে এবারে পজোর সময় অভ্রের অনুরোধেই বাবা কলকাতাতে আসে দমদমের পুরানো পাড়াতে এসে ভালো লাগলেও খুব বেশি আনন্দ করতে পারেনিমায়ের কথা খুব বেশি করে মনে পড়তেই নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছিল তাও বাবাকে কিছু সময়ের জন্যে কয়েকজনের সাথে রেখে একটা গাড়ি ভাড়া করে অভ্র অষ্টমীর দিন সকালে আবার সাত বছর আগের সন্দিপদের পাড়াতে চলে আসে খুঁজে খুঁজে সন্দিপদের পাড়াতে গেলেও কি রকমে যেন সব কিছু গুলিয়ে গেলএমন কি যে জায়গাটাতে পুজোটা দেখে ছিল সেখানে এসেও সব  কিছু ম্যাড়মেড়ে লাগলপুজোর সেই জৌলুসটাই কোথায় যেন হারিয়ে গেছেসন্দিপদের বাড়িটা ভাসা ভাসা মনে ছিলএকটু জিজ্ঞেস করে আর পুরানো স্মৃতিকে সঙ্গী করে সন্দিপদের বাড়িতে পৌঁছে গেলএতোদিন পরে অভ্রকে দেখতে পেয়ে স্বভাবতই সন্দিপ চিনতে পারল নাঅভ্রকে নিজের পরিচয় দিতে হলও নিজে অনেকটাই মোটা হয়ে গেছেসন্দিপের মাথাতেও তখন চুল আর সময় যুদ্ধ করতে আরম্ভ করেছেকে কার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেঁচে থাকেসন্দিপের মা অভ্রের জন্যে জল খাবার এনে বললেন,‘বৌমা এই মণ্ডপে গেলএখন তো আর জায়গায় মণ্ডপ হয় নাএকটু দূর হয়ে যায়আমি আর সব সময় যায় না

অভ্র কথায় কথায় বলে ফেলে,‘জানিস এতদূর থেকে আমি কিন্তু তিন্নির খোঁজেই এসেছিসে সময় এখান থেকে যায় ফোনের ততটা চল ছিল নাতোর নম্বর জোগাড় করতে পারিনি আর তিন্নির নাম্বারটাতো ছিলই না’ তারপরেই অভ্র তার মায়ের মারা যাওয়ার কথাটা বলেঅভ্রর সব কথা শুনে সন্দিপ বলে, ‘আমি তিন্নিকে দেখাতে পারিকিন্তু তুই চিনতে পারবি না

কি যে বলিসআমি একবার দেখে ছিলামকিন্তু তাতেই মনে মধ্যে ছবিটা এক্কেবারে এমন ভাবে গেঁথে গেছে এখনো তার মুখ উঠতে বসতে মনে পড়ে বাবা বিয়ের কথা বলতেই এখানে চলে এসেছি অবশ্য সবাই শুনে আমাকে খ্যাপা বলবেসেই সাত বছর আগে একজনকে দেখে বিয়ে করতে চলে এসেছি

অভ্র শেষের কথাগুলো বলেই হাল্কা হেসে উঠল

-নারে তুই ওকে চিনতে পারবি না

নিশ্চয় পারবোঅবশ্য ওর সাথে যদি দেখা হয়হয়ত এখন বিয়ে হয়ে গেছেকোথায় বিয়ে হয়েছে সেটাও একটা ব্যাপারতারপর তুই সে সব খবর জানিস কিনা সেটাও তো জানি না কিন্তু কেমন যেন মনে হল তুই সব জানিসতাই কোন দিক না দেখে আমি তোর কাছে চলে এলাম

-এক কাজ করমাথাটা ঘুরিয়ে তোর মাথার পিছনের দেওয়ালের দিকে তাকাসন্দিপ বলে
অভ্র সঙ্গে সঙ্গে মাথাটা ঘুরিয়ে পিছনের দিকে তাকাতেই চমকে ওঠেকনের সাজে তিন্নিতার পাশে সন্দিপছবিটা বেশ কয়েক বছর আগের তোলা হলেও সেই সাত বছর আগের তিন্নি আর এই তিন্নির মাঝে অনেক পার্থক্য

পিছন থেকে সন্দিপের গলার আওয়াজ শুনতে পায়তিন্নি এখন আমার ওয়াইফ

অভ্র কিছু সময় চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকেসব হিসাব কেমন যেন গণ্ডগোল হয়ে যাচ্ছেনিজেকে হঠাৎ কেমন যেন বোকা মনে হয় সত্যি তো সাতটা বছর কম নয়অনেক কিছুকেই বদলে দেয়যারা বোঝে টিকে থাকেযারা বোঝে নাকষ্ট পায় কিন্তু সন্দিপ কি করে এটা করতে পারলপিছন থেকে আবার সন্দিপের গলার আওয়াজ পেল, ‘তিন্নির সাথে দেখা করবি?’

অভ্র একটু অন্যমনস্ক হয়ে গেছিলসন্দিপের গলা শুনে একটা লম্বা শ্বাসের সাথে উত্তর দিল,‘ নাআমার তিন্নি আমার কাছে সাত বছর আগের হয়েই থাকতবে তোকে অভিনন্দনভালো থাকবিআর তোর তিন্নিকে খুব ভালো রাখবি

জল খাবারের প্লেট টেবিলে নামানো থাকেঅভ্র তাড়াতাড়ি সন্দিপদের বাড়ি ছাড়েবাবা একা আছেতাড়াতাড়ি ফিরে যেতে হবেএখনো অনেক কাজ বাকি

সাহিত্যিক ঋভু চট্টোপাধ্যায়
দুর্গাপুর, পশ্চিম বর্ধমান, পশ্চিমবঙ্গ
























0 Comments