সোমনাথ বেনিয়ার মুক্তগদ্য


পছন্দের উড়ান,অপছন্দের ঋতু

ভূমিকা বাদ দাও। উপসংহারে না-হয় ভূমিকার কথা বলবে। শূন‍্য মানে শেষ, অন‍্যদিকে শুরুও হতে পারে। মাঝের এই আধখ‍্যাঁচড়া চরিতসমগ্র বুলেট দিয়ে ভাগ করে দাও। এখন যার যে প‍্যারায় মন বসবে, সেখানে বাসা বাঁধবে। সংসার করবে। যতিচিহ্নের কাছে কৈফিয়ত রাখবে। লক্ষ্মণের টেনে দেওয়া গণ্ডি। পেরোনো যাবে না ওরফে পেরোনোর দরকার নেই। কারোর সঙ্গে কারোর স্পর্শ নেই। লিগ‍্যাল অস্পৃশ‍্যতা কাজ করবে। সংবিধানের অ্যামেডমেন্টের দরকার নেই। বড়োজোর হাতে দস্তানা পড়ে কিছুটা আনুমানিক দূরত্ব থেকে ভালো-মন্দের খবর নিয়ে বাইপাস করে যাবে আন্দোলিত মনের অভিপ্রায়। অন‍্যের হাতের উপর নয়, নিজের হাতের উপর নিজের ফিঙ্গার প্রিন্ট রাখো। বাঁধানো নতুন খাতার মতন তুলে রাখো গন্ধ শুঁকে আপাতত। ধুলো জমলে তা পরিষ্কার করে সরলবর্গীয় অরণ‍্য করে তুলবে। যে যার মতন চড়ুইভাতি করবে নদী কিংবা খালের ধারে। গন্ধ কাঁটাতারের বাধ‍্যবাধকতা মানে না। তার মুদ্রাদোষ তরঙ্গায়িত হয়ে পারাপার হ‌ওয়া। তখন তার কোনো স্পর্শদোষ থাকে না। এক নিশ্বাসে যতটা পারা যায় ফুসফুসে গ্রহণ করে রক্তে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়। খিলখিল আনন্দ রক্তের কণিকা যাদের অর্গাজমে ভূমিকা নেই, উপসংহারে প্ররোচনামূলক বিন্দুবিসর্গ থাকতে পারে। প্রতি প‍্যারায় যতটুকু স্পেস থাকবে সেখানে জমবে কুয়াশা। হিমায়িত দৃষ্টির আবছা পাণ্ডুলিপি প্রত্ননিদর্শন হিসাবে থাকবে। যেন নতুন করে উঠে আসবে রূপকথার ব‌ই ঠেলে রঘু ডাকাতের গল্প। নটে গাছ মুড়ে যাওয়ার আলোচনাপর্ব। ফটোফ্রেম ছেড়ে বেরিয়ে আসবে ঠাম্মার পান খাওয়া মুখের সুবাস। প্রতি লাইনের যাপনচিত্রের মধ‍্যে বিনি সুতোর মালা গাঁথা থাকলে ভালো, না থাকলে আর‌ও ভালো। মায়ার কোনো বাঁধন নেই। মুক্ত পরিযায়ী পাখির মতন সাইবেরিয়া থেকে সাঁতরাগাছি। পছন্দের উড়ান। অপছন্দের ঋতু। মিলন যেন স্বচ্ছ শিফন শাড়ির আঁচল। এপার থেকে ওপার দেখার মধ‍্যে অপার পবিত্র মুগ্ধতা আছে। কোনো উন্নাসিকতা নেই। লাইক, কমেন্ট কিংবা শেয়ারের অভাব নেই। এক-এক জন হয়ে উঠবে এক-একটি আদর্শ দ্বীপ। পাঁজরের কিউবিকলে হৃদয় অনবরত নিজেকে নিজে মন্থন করবে। যত‌ই নিঃসঙ্গতা উঠে আসুক না কেন তার কোনো ভূমিকা থাকবে না। হাত ধরার গল্প সর্বদা ইউনিক। হাত ছেড়ে গেলেও তার বিষণ্ণতা ইউনিক। ইউনিকের আবার ভূমিকা কী?


গদ্যকার সোমনাথ বেনিয়া
নিমতা, উত্তর ২৪ পরগনা, পশ্চিমবঙ্গ














0 Comments