আবদুস সালামের দুটি কবিতা




পাশপোর্ট

ভাঙনের সূত্র মেনে হৃদয় ভেঙে পড়ে
জীবনের প্রতিটি পাতায় লেখা হয় ভুলের কবিতা
পৃথিবী রঙের দুঃখ দিয়ে আমরা সাজাই বাসর
চাঁদের করুণ আলোয় ভেসে যায় সম্মোহনী রাজ‍্যপাঠ

অসহায় সাঁতার কাটছি মরুভূমির মাঠে
নগ্ন দুঃখ গুলো কপালে তিলক এঁকে দিব‍্যি গাইছে রামধুন গান
ধর্ম বাবারা সম্ভ্রম খোয়ানোর দীক্ষা দিচ্ছে প্রতিদিন
রুক্ষ শহর খালিপেটে ছুটছে নিছক প্রসাদ পাওয়ার আশায়
হাহাকারের বাজনা বাজছে ভোরের উপত্যকায়

ঠিকানা হারিয়ে যায়
দলে দলে জড়ো হয় গান্ধী মূর্তি পাদদেশে
তিলক আঁকি কপালে
মোক্ষ লাভের  অলীক ঈশ্বর পাসপোর্ট দেয় 
জর্জরিত আবেগ নিয়ে হেঁটে চলেছি
রক্তশূন্য আত্মারা বিষন্ন পোশাকে ঢেকে দিচ্ছে শরীর

দীর্ঘ মরণ চেটে নিচ্ছে জীবনের ঘ্রাণ
ভাঙনের সূত্র মেনে ই হৃদয় ভাঙ্গার অঙ্ক শিখছি প্রতি দিন।

অসহায় ছুটে চলেছে

আমরা বেঁচে আছি
নির্বাক অভিনয় করে চলেছি প্রতিদিন

মাঠে রাখালেরা বাঁশি বাজায় না এখন
সময় নেই
ইউটিউব কেড়ে নিচ্ছে সময়
হয়তো বা গরু চরানোর  মাঠ নেই
ইতিউতি কিছু ভ্রান্ত কাক কা কা করছে তার খুঁটির মাথায়

বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকার শুষে নিচ্ছে ভারতবর্ষের চাঁদ
অসম্ভব কষ্ট পাওয়া দিন গুজরান হয়
কিশোরী আগুন দাউদাউ করে জ্বলে

প্রেমের উৎস মুখে জলসাপের আনাগোনা
জল ছুঁই ছুঁই আত্মহত‍্যা

ছায়ারা হেঁটে চলে

আর পাঁচটা লোকের মতো মনখারাপ দানা বাঁধে
সভ‍্যতার অকাল বৃষ্টি ধুয়ে দেয় পরজন্মের সকাল
মাথা গরম করা সূর্য ওঠে প্রতিদিন
শূন্য বোধের মাঠে শকুনেরা মাতে উল্লাসে টপ আনাগোনা

বেঁচে আছি অথবা মরে গেছি বলতে ভয় হয়
করোনা সন্দেহে ছূঁয়েও দেখবেনা কেউ
বিষ্ময়ের দরজায়  গর্জে ওঠে অপমান
রক্তের ক্ষরণ চলে ধর্মের গুঁতোয়

বিপন্ন সময়
মানবতা মৃত্যু পথে ধাবমান
পুঞ্জীভূত হতাশার ঘটে পরাগমিলন
অসহায় ছুটে যায় নির্ঘুম ছায়া পথের হাত ধরে

কবি আবদুস সালাম
রঘুনাথগঞ্জ, মুর্শিদাবাদ, পশ্চিমবঙ্গ








1 Comments

  1. খুব সুন্দর কবিতা। প্রথম দুলাইনেই চমৎকার উপস্থাপনা:
    "ভাঙনের সূত্র মেনে হৃদয় ভেঙে পড়ে
    জীবনের প্রতিটি পাতায় লেখা হয় ভুলের কবিতা"

    উত্তরমুছুন