সাদা চাদরের নীচে
ছ'বছরকে খুঁটির গায়ে বেঁধে
পাড়াশুদ্ধু লোকের গণবিকার
গণবিকারে শিশুটি হাসপাতালে
ছ'বছরের নাকে মুখে নল স্যালাইন
ছ'বছরকে নিয়ে ডাক্তারদের প্রাণান্ত
অপরাধ -ছ'বছর লবণ চুরি করেছিল
লবণ দিয়ে পান্তা মেড়ে খাবো বলেছিল
সমস্বরে পাড়াশুদ্ধু লোক চিৎকারে বলেছিল -
"ছ'বছরের এত খিদে পায় কেন
ছ`বছর কি কাঁদতে পারেনা-কান্নাতে তো লবণ আছে
ছ'বছর কাঁদতে পারে না
খিদে পেলে চুপ হয়ে যায়
ডাস্টবিনে খাবার খোঁজে
চুরি করার চেষ্টা করে-কিন্তু কাঁদে না
সমস্ত কান্না তার চুরি হয়ে গেছে
গণবিকারে পা থেকে মাথা পর্যন্ত কাঁচা শরীরটা
থেঁতলে গিয়েছিলো কিন্তু এক ফোঁটা লবণ
তার দুচোখ থেকে ঝরেনি
তাই ডাক্তারবাবুরা স্যালাইনে লবণ দিচ্ছে
ছ'বছর এখন হাসপাতালের বেডে শুয়ে
স্যালাইনে লবণ টানছে আর ভাবছে
ছ'বছরদের বাঁচা উচিৎ কি উচিৎ নয়-
এই গণবিকারের দেশে
এই অপুষ্ট অজীর্ন দেশে
এই কান্না চুরির দেশে
এই শৈশব চুরির দেশে
ভাবছে মাটিগাড়ার ছ'বছরেরা
ভাবছে গোটা রাজ্যের গোটা দেশের ছ'বছরেরা
নাকি হাসপাতালের সাদা চাদরের নীচে
লবণের মতো সাদা গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে
ঝরে ঝরে ঝরে যাবে ভাবছে ভাবছে !
কবি সুকুমার হালদার
৪/১ যাদবগড়, হালটু, কলকাতা
1 Comments
কবি সুকুমার হালদারের লেখা "সাদা চাদরের নীচে"কবিতাটি মনটা ছুঁয়ে যায়। অত্যন্ত বাস্তবধর্মী এই লেখা পড়ে চোখে জল এসে যায়। আমাদের সমবেত চেষ্টায় এ সমাজ বাসযোগ্য করার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যদি হই তবেই আজকের দিনটি সার্থক হবে।
উত্তরমুছুন