বনশ্রী রায় দাসের কবিতা


ধুয়ে দিতে পৃথিবীর অসুখ
 
বুকজলে বানভাসি কাশবন
নীল আকাশের বুকে খুঁজে চলে চিন্ময়ী মুখ।
কুঁড়ি ভেঙে ফুল ফুটিয়েছে নীলপদ্ম
শরতের মেঘ কুচি,নিজের শরীরে মেখে সুখ।
লিখে রাখে শঙ্খ ঘোষের কবিতার চিত্রকল্প ।
সকালে সোনারঙা রোদ্দুর আলাপ ভাসায় 
সুর খুঁজতে শ্যামল শোভন তরঙ্গ- ধ্বনি 
শান্তি রূপের অধিষ্ঠান নবপত্রিকায়।

দিগন্তের আড়ালে ঢেউগুলি রাঙিয়ে নেয় সাত সমুদ্র তীর,তেরো নদীর দুঃখ ঘোঁচাতে মা আসছেন সিংহবাহিনী। 
পাশের বাড়ির সংসারের  দুর্গার ঝলসানো 
শরীর আবার দুঃখ ভুলে সুখের অমরাবতী । 
অভুক্ত থাকবে না আর শাঁখারি পাড়ার দুর্গা। 
নতুন শাড়ি পরবে কুমোর পাড়ার নতুন বউ।
ছেলে গনেশের আঙুলে আঙুল জড়িয়ে 
দুগ্গা ঠাকুর দেখতে যাবে পাল পাড়ার দুর্গা ।

শুধু তুমি চোখ মেলে চাও 
হিমেল পরশে স্নিগ্ধ হোক দুঃখী উঠোন
পৃথিবীর অসুখ ধুয়ে যাবে 
তোমার শান্তি যজ্ঞের হোমকুন্ডে ।
সারি গানের সুরে সুরে ভালোবাসার দিন
হ্রীং মন্ত্র মহার্ঘ্য ধূপ-ধুনো ভেজা বাতাস  ।

কোথায় আমার মা 
রূপালী আঁচলের নরম ছোঁয়া 
মনে হয় এক ছুট্টে চলে যাই চম্পা নদীর পারে।
নৌকো হয়ে ভেসে যাক হৃদয় খানি
মাস্তুলে বসতে পারে পরিচিতি পাখি 
কুটুম কুটুম সম্ভাবনা নিয়ে জোয়ার 
আসবে রোজ সকালে বিকেলে 
হানাহানি ভুলে ঢাক কাঁসর 
নহবতে বাজছে শোনো গো স্বস্তির ধ্বনি ।

চামর দোলায় নীল আকাশে
পেঁজা তুলোর দিন রাত ওই হাসে
কোথাও বা থিমের জোয়ারে যায় ভেসে 
ভক্তি কোথায়? কেবল দেখানোপনা     
আড়ম্বরের আলগা বাহাদুরি
দেখতে দেখতে চোখে চমক আহামরি ।
মা কখনো চান না এসব অনাসৃষ্টি ।
ফুটপাতে তার ভিজে অসহায় সন্তান
ক্ষুধার্ত, বিষাক্ত কীটের আনাগোনা 
চোখ ফেটে ঝরছে অঝোরে বৃষ্টি ।

শুদ্ধ মনে চুয়া-চন্দনে অন্তর হোক পুষ্পাঞ্জলি 
অদূরে শান্তস্বরে শোনা যাচ্ছে 
চন্ডী পাঠের স্তোত্র 
বেতারে বাজবে ব্রাহ্ম-মূহুর্তে 
বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র ,তখনই দেবী পক্ষে 
পুষ্পেপত্রে মায়ের আগমনী  সুর।
"যা দেবী সর্বভূতেষু মাতৃরূপেন সংস্থিতা "
সূচি মনে শুদ্ধ বসনে করজোড়ে করি প্রার্থনা 
মঙ্গল করো মঙ্গলময়ী মর্মে দাও করুণা।

কবি বনশ্রী রায় দাস 
শান্তিপাড়া দক্ষিণ পাড়া, মেচেদা, মেদিনীপুর 
















        



0 Comments