সুইজারল্যান্ড কলিং
ভ্রমণপিপাসু বাঙালি বেশ কিছুদিন আগে থেকেই দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে পাড়ি দিতে শুরু করেছে বিদেশে।সিঙ্গাপুর,ফুকেট এমনকি মিশরের মাটিতেও মিশিয়ে দিতে পেরেছে বাঙালিয়ানার ঘ্রাণ।তবে চেনাজানা এমন জায়গায় না গিয়ে অবশ্যই ঘুরে আসতে পারেন ইতিহাস আর ভূগোলের মিশেলে মোড়া স্বপ্নের মহাদেশ ইউরোপের ছোট্ট দেশ সুইজারল্যান্ডের ছোট্ট শহর ইন্টারলেকেন কিংবা লুসার্ন থেকে।চোখের খাঁচায় বন্দি করতে না পারলে সত্যিই বোঝার উপায় নেই এই শহরগুলির সৌন্দর্য।ট্রাভেল এজেন্সির পাঠানো আইটেনারি পড়ে প্রথমে আমারও কেমন যেন মনে হয়েছিল জায়গাগুলো সম্পর্কে।চাক্ষুষ করার পর অবশ্যই আর কোন সন্দেহ থাকল না।
মনে পড়ে বিখ্যাত সেই হিন্দি চলচ্চিত্রের দিললগির সেই মুহূর্ত? হ্যাঁ হ্যাঁ,ঠিকই ধরেছেন। "দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে জায়েঙ্গে" সংক্ষেপে "ডিডিএলজে" তাইতো?
দিললগি মানে মস্করা।রাজের হাত থেকে সিমরণের সেই নকল ফুল নেওয়ার মুহুর্ত আজও মনে পড়ে সব্বার।ইন্টারলেকেনেই শুট করা হয়েছিল।
"Interlaken" অর্থাৎ between the lakes ( in latin inter lactus) নামই বলে দেয় যার বর্ণনা।পশ্চিমে পান্না সবুজ থুন হ্রদ, পূর্বে ব্রিয়েনজ।তারই মাঝে ঐতিহ্য আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মোড়া ইন্টারলেকেন। "Ho he Matte" হল এ শহরের বুক জুড়ে ছড়িয়ে থাকা বিশাল উন্মুক্ত পার্ক,যেখানে অনায়াসেই ঘুরে বেড়ানো যায় কিংবা সবুজ ঘাসে গা এলিয়ে দিয়ে চোখ রাখা যায় বরফমোড়া ইগার, মঞ্চ অথবা ইয়ংফ্রইয়ক শৃঙ্গে।পার্কের চারিদিকে সারি সারি দাঁড়িয়ে আছে ক্যাশিনো, কফিশপ,রেস্তোরাঁ, স্যুভেনির শপ।খোলা আকাশের নিচে এক কাপ গরম কফিতে চাইলে চুমুক দিতেই পারেন।না চাইলে?মেলতে পারেন ডানা আকাশের নীলে। কেমন করে?
প্যারাগ্লাইডিং,অ্যাবসেইলিং আপনাকে হাতছানি দেবেই।এছাড়া অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় বাঙালির জন্য আছে রিভার রাফ্টিং, ক্যানিয়নিং।"অ্যাডভেঞ্চারাস ক্যাপিটেল" নামে পরিচিতি কি আর এমনি এমনিই পায়।তাহলে?এবারের ডেস্টিনেশন তবে ইন্টারলেকেন তাইতো?
ইচ্ছে না হলে চলে যেতেই পারেন লুসার্ন। এটিও সুইজারল্যান্ডের ছোট্ট পুরোনো শহর।মাঝখানে বেশ বড় লুসার্ন লেক।এ শহরের মূল আকর্ষণ ১৩৬৫ খ্রিস্টাব্দে তৈরি বিখ্যাত কাঠের ব্রিজ।নাম "চ্যাপেল ব্রিজ"। Reuss নদীর উপরে তৈরি এই ব্রিজে একবার ভয়াবহ আগুন লাগলেও এখনও পর্যন্ত এটি এখানকার অন্যতম ল্যান্ডমার্ক রূপেই দাঁড়িয়ে আছে প্রাচীন ঐতিহ্যের নিদর্শণস্বরূপ।এছাড়া সুইজ ব্যাঙ্ক, চকলেট শপ,সুইজ ওয়াচ শপ।চটপট কিনে ফেলতেই পারেন সাধের একখান রিস্টওয়াচ।ঘুরে ঘুরে দেখে নিন প্রাচীন সব স্থাপত্য। ঝিরঝিরে বৃষ্টি চলে প্রায়ই,সঙ্গে হালকা শীত।গরমের দেশের মানুষদের কাছে এ যেন বাড়তি পাওনা তাই না?
তবে আর দেরি না করে, গুছিয়ে ফেলুন রুকস্যাক।ছাতা আর টুপি মাস্ট।সানগ্লাসও।"সুইস ফ্রাঁও চাই সাধ মেটাতে খুচরো কিংবা নোটে,দেখুন না বেড়িয়ে পড়ে কপালে কি সুখ জোটে"।
3 Comments
তুই তো ভ্রমণ কাহিনীটা দারুণ লিখলি! আরও আরও পড়ার আশায় থাকলাম।
উত্তরমুছুনখুব সুন্দর ভ্রমণ কাহিনী
উত্তরমুছুনভ্রমণ কাহিনী খুব ভালো লাগলো, এর পর...অপেক্ষায় রইলাম..
উত্তরমুছুন