দালান জাহানের গুচ্ছ কবিতা
হৃদয়ের ফুল
বাড়ির সামনে যে শাসনের ফুল
তাতে কেবলই ফোটে
মালির হাতের পাঁচটি আঙুল।
ফুল তো বনেও ফোটে বাগানেও ফোটে
প্রকৃত ফুল ফুটাতে হয় হৃদয়ে
যে ফুল ফুটলে মানুষও হয়
বৃক্ষের মতো প্রণয়নত।
পাহারাদার
দরিদ্র পাড়ার ছাতার তলে
আমি আহ্বান করি সূর্যের ছায়া
অপ্রত্যয়ের যোগ শেষে
রক্তন পাতায় জমায়িত হয় প্রাগৈতিহাসিক সুর
যে সুরে ধনুক চালিয়ে পাহারা দেই
তোমার টইটুম্বুর যৌবন।
মধ্যরাতের সেলাই ছিঁড়ে
ডেকে আনি টাকার ভগবান
এবং গলায় ঢেলে দেই নিতম্ব ঝিনুক
তিনি শেষ রাতে তোমার ছবি
বমি করে ফেলে যান জলের নৌকায়।
এভাবেই তুমি ফুরিয়ে যাও
যেন এক রাতের ভাঙা হারিকেন
এরপরেও কি তোমার মনে হবে!
তোমায় এতো ভালোবাসি ক্যান ?
নীলপদ্ম
আজ এই প্রথম অপ্রস্তুত মুখটি
সকাল হতে খেলা করছে
আঙিনায় লাল কাঞ্চন জবা
হাতির সুরের মতো বের করছে
একশো বছরের সমবেদনা
তুমি ছাড়া কী রকম এতিম আমি
যে কথাটি হৃদয়ে লেখি
সে কথাটি তোমায় লেখি না
ময়ূর নিদ্রায় ভেসে যায় নীলপদ্ম
কতোদিন! কতোদিন! প্রিয়
মাথা উঁচু করে আকাশ দেখি না।
কিছু বলব না
আমার শেষ অপেক্ষা থাকবে
একটি বিন্দুর জন্য
সমস্ত চাপ সহ্য করেও
আমি এগিয়ে যাবো
কিছু একটা বলার জন্য
কিন্তু যতোক্ষণ না মানুষেরা পাগল হচ্ছে
পুরোপুরি গলে যাচ্ছে সূর্যতাপে মস্তিষ্ক
ততোক্ষণ আমি কিছু বলব না
ততোক্ষণ আমি কিছু শুনব না।
আজরাইলের উচ্চতা
আমাকে হত্যার জন্য
ভাড়া করা হয় দুটি জোড়া শব্দ
ও দুটি কালো বিড়াল
সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত
তারা আমাকে আচ্ছন্ন রাখে অন্ধকারে
আমি তার গর্তে গড়িয়ে পড়ি
সকালের আলোর মতো
যতোক্ষণ না আরেকটা অন্ধকার আসে
ততোক্ষণ হৃদয় দিয়ে মাপতে থাকি
পৃথিবীর রাইফেল থেকে বেরিয়ে যাওয়া
আজরাইলের উচ্চতা।
1 Comments
প্রথম কবিতাতেই বাজিমাত... খুব খুব সুন্দর
উত্তরমুছুন