অবাধ্য ~ শ্রীপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অণুগল্প


শ্রীপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অণুগল্প 
অবাধ্য 

স্কুলে পড়ার সময় ঠিক হাঁটুর ওপর পর্যন্ত খাটো স্কার্ট পরার শখ হয়েছিল। মা বাবা দুজনেই না করে দিলেন। একটু বায়না করায় বাবা সোজা থাপ্পড় কষিয়ে বলেছিলেন, "এত অবাধ্য কেন? অসভ্য মেয়ে! ছেলেদের অ্যাটেনশন চাই, তাই না?"
এমএ করে একটা ছোট চাকরি পাওয়ার পর একটা ছেলের সঙ্গে ধরেবেঁধে বিয়ে দেওয়া হল। ফুলশয্যায় বর শাড়ি তোলার সময় হাঁটুর ওপর উঠতেই সহজাত লজ্জা আড়ষ্টতায় বাধা দিই। সে জোর করে। আমিও একটু জোরে চেপে ধরি। রেগে গিয়ে মারমূর্তি ধরে বলেছিল, "এত অবাধ্য কেন? ঠ্যাঁটা মেয়ে! বিয়ে করার দরকারই ছিল না, তাই না?"
তারপর একদিন অফিস থেকে ফেরার সময় চার-পাঁচজন আততায়ী আমাকে তুলে নিয়ে গিয়ে সর্বস্ব লুঠ করল। রক্তাক্ত করে ফেলে রাখল না, সোজা চালান করে দিল।

ঘুপচি ঘরে দু'জন ক্ষুধার্ত দ্বিপদ পুরুষ এসে শুধু হাঁটুর ওপর পোশাক তুলতে নয়, হাঁটু গেড়ে বসতেও বলে। আমি ওয়াক তুলতেই চুলের মুঠি ধরে বলল, "এত অবাধ্য কেন? বেয়াড়া মেয়েছেলে! ডাকছি হাবিবকে। মেরে বিষ ঝাড়াতে হবে, তাই না?"

লেখিকা শ্রীপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়
সোদপুর, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ 




0 Comments